রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঈমান দুর্বল হলে যে ক্ষতি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০২:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

ঈমান দুর্বল হলে যা হয়

ঈমান মুমিনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। এই সম্পদ দুর্বল হয়ে যায় মূলত অসৎকাজের কারণে। ফলে ইবাদতে অলসতা তৈরি হয়। মহান আল্লাহর বিধানাবলীর প্রতি অবহেলা, ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদির পেছনে সারাক্ষণ ছুটে চলা, শরিয়াহবিরোধী কাজে লিপ্ত হওয়া এবং এরপরও মনে অনুশোচনা বোধ না হওয়া, এক পর্যায়ে অন্তর কঠিন হয়ে যাওয়া—এসব দুর্বল ঈমানেরই প্রতিফলন। 

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর এ ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে, তা পাথরের মতো অথবা তদপেক্ষাও কঠিন’। (সুরা বাকারা: ৭৪)


বিজ্ঞাপন


দুর্বল ঈমানের কারণে হালাল-হারাম পার্থক্য করার শক্তি লোভ পায়। মৃত্যু ও পরকাল সম্পর্কে মানুষ থাকে উদাসীন। অধিকাংশ মানুষের ঈমান দুর্বল হলে সমাজ অন্যায়-অবিচার, চুরি-ডাকাতি, হানাহানি, মাদক ও অশ্লীলতায় ছেয়ে যায়।

ঈমানকে তাজা ও শক্তিশালী রাখার জন্য সবসময় নেক আমল করতেন সালাফরা। মুসলিম উম্মাহরও তাঁদের অনুসরণ করা উচিত, যাতে মূল্যবান সম্পদে মরিচা না ধরে। ঈমানের দুর্বলতা কাটানোর কার্যকর আমলগুলো হলো-

—যাদের সংস্পর্শে গেলে আমল বেড়ে যায় তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো। (সুরা তাওবা: ১১৯)

আরও পড়ুন: ঈমান নষ্ট হয় যেভাবে


বিজ্ঞাপন


—কোরআন তেলাওয়াত করা, শোনা এবং চিন্তা-গবেষণা করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘...আর যখন তাদের সামনে তাঁর (আল্লাহর) আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়..। (সুরা আনফাল: ২) 

—সীরাত ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়া। মহানবী (স.) ও সাহাবায়ে কেরামের ঈমানকে আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য আদর্শ বানিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করো, তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। আর যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ অভাবমুক্ত ও প্রশংসিত।’ (সুরা মুমতাহিনা: ৬)

—ভালোবাসা বা ঘৃণা সবকিছু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হওয়া। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, আল্লাহর জন্য প্রদান করে এবং আল্লাহর জন্য প্রদান থেকে বিরত থাকে, সে ঈমান পরিপূর্ণ করেছে। (আবু দাউদ: ৪৬৮১)

এছাড়াও বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, আল্লাহর নিদর্শন ও নেয়ামতগুলো নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করা, অধিক পরিমাণে মৃত্যুকে স্মরণ করা, ইলমি মজলিসে বসা, গুনাহ থেকে দূরে থাকা ও গোপনে নেক আমল করা ইত্যাদি ঈমানি দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার কার্যকর উপায়।

আরও পড়ুন: ঈমানের শাখা-প্রশাখাগুলো কী

মূলকথা হলো- ঈমানকে সবল করা ছাড়া মুমিনদের বিকল্প নেই। আর এ জন্য এককথায় গুনাহ থেকে দূরে থেকে নেক আমল বাড়াতে হবে। মজবুত ঈমান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তুমি বলো- আমি আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছি, অতঃপর তার ওপর অবিচল থাকো’। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় যারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে—তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোনো’। (সুরা ফুসসিলাত: ৩০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈমানি দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠতে বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দিন। ঈমান সুদৃঢ় করে দিন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর