সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

স্বামীর মৃত্যুসংবাদ দেরিতে পেলে ইদ্দতের বিধান কী

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২৪, ০৬:২৮ পিএম

শেয়ার করুন:

স্বামীর মৃত্যুসংবাদ দেরিতে পেলে ইদ্দতের বিধান কী

স্বামী যদি মারা যায় বা স্ত্রীকে তালাক দেয় কিংবা যেকোনোভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাহলে স্ত্রীর জন্য নিজেকে কিছুদিন ঘরে আবদ্ধ থাকা ইসলামের জরুরি বিধান। সেই সময়ের মধ্যে ঘর থেকে জরুরত ছাড়া বের হওয়া যাবে না এবং অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না। তালাকের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ হলে তিন হায়েজ পরিমাণ সময় হলো ইদ্দত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েজ পর্যন্ত। (সুরা বাকারা: ২২৮)

স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে চার মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন করতে হয়। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস ১০ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে..।’ (সুরা বাকারা: ২৩৪)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ইদ্দত পালন ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করলে কি বৈধ হবে?

প্রশ্ন হলো- প্রবাসে বা খবর জানার সুযোগ নেই—এমন জায়গায় থাকা স্বামী মারা গেলে, তার মৃত্যুসংবাদ পেতে কোনো কারণে ৪/৫ মাস দেরি হলে স্ত্রী কি খবর পাওয়ার পর থেকে ইদ্দত পালন করবে? নাকি ইদ্দত পালনের আর প্রয়োজন নেই?

এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই স্ত্রীর ইদ্দত শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ মৃত্যুসংবাদ না পেলেও মৃত্যুর সময় থেকে স্ত্রীর ইদ্দতের সময় শুরু হয়ে যায়। তাই ইদ্দতকালীন সময়ে স্ত্রী অজ্ঞতাবশত ইদ্দতের নিয়মকানুন পালন না করলেও ইদ্দতের সময়ের হিসাব হবে। বিখ্যাত তাবেয়ি মাসরুক (রহ) বলেছেন, ‘স্ত্রীর অজান্তে স্বামী মৃত্যুবরণ করলে কিংবা স্ত্রীকে তালাক দিলে মৃত্যু ও তালাকের দিন থেকে ইদ্দত গণনা শুরু হবে।’ তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মৃত্যুর খবর জানতে ৪ মাস ১০ দিন পেরিয়ে গেলে ওই নারীর ইদ্দত পূর্ণ হয়ে গেছে। মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর নতুন করে ইদ্দত পালন করতে হবে না।

আরও পড়ুন: তালাক দেওয়ার ভুল ও শুদ্ধ পদ্ধতি


বিজ্ঞাপন


উল্লেখ্য, চার মাস ১০ দিন ইদ্দতের সময় বিধবা নারীর ছয় করণীয় রয়েছে—১. স্বামীর ঘর-বাড়িতে অবস্থান করবে। ২. সাজসজ্জাহীন সাধারণ পোশাক পরিধান করবে। ৩. সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। ৪. অলংকার ব্যবহার করবে না। ৫. মেহেদি ও কাজল ব্যবহার করবে না। ৬. সরাসরি বিবাহে আবদ্ধ হওয়া বা বিবাহমূলক কথা বা কাজ করবে না। তবে প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে পারবে এবং চিকিৎসার প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবে।

(সুরা বাকারা: ২৩৪; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ১০/১৩১; শরহু মুখতাসিরুত তাহাবি: ৫/২৪৮; আলমুহিতুল বুরহানি: ৫/২৩৩; রদ্দুল মুহতার: ৩/৫২০; বাদায়েউস সানায়ে: ৩/৩০১; আলবাহরুর রায়েক: ৪/১৩২)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর