কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ইবাদত। যা সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকার পরও যারা কোরবানি করে না, তাদের ব্যাপারে হাদিসে কঠিন কথা বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। (ইবনে মাজাহ: ২১২৩)
ওয়াজিব কোরবানি যথাসময়ে দিতে না পারা ব্যক্তি কোরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার ওপর কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কোরবানি দেওয়া হয়নি তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দিতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৪; ফতোয়ায়ে কাজিখান: ৩/৩৪৫)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কোন ধরনের সম্পদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়
তবে, কেউ সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি না করলে তাকে কোরবানির গোশত দিতে নিষেধ করা হয়নি। বরং আত্মীয় স্বজনকে কোরবানির গোশত দেওয়া সওয়াবের কাজ। যদিও না দিলে গুনাহ নেই। কোরবানির গোশত দেওয়ার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা তা খাও জমা করে রাখো এবং দান-খয়রাত করো।’ (বুখারি: ৫৫৬৯; মুসলিম: ১৯৭২; নাসায়ি: ৪৪২৬; মুআত্তা মালিক: ২১৩৫)
এমনকি কোরবানির গোশত অমুসলিমদেরকে দেওয়াও জায়েজ, বরং ক্ষেত্রবিশেষে দেওয়া উত্তম। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩০০)
বিজ্ঞাপন
কোরবানির গোশত বিতরণের উত্তম পদ্ধতি হলো—এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া। অবশ্য পুরো মাংস যদি কেউ নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২২৪; আলমগিরি: ৫/৩০০)
অতএব, যে আত্মীয় ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও কোরবানি দেয়নি তাকেও কোরবানির গোশত দেওয়া যাবে। আল্লাহ তাআলা সামর্থ্যবান সবাইকে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আত্মীয়-স্বজন, গরিব-দুঃখী সবাইকে গোশত দেওয়ার মানসিকতা দান করুন। আমিন।

