কোরবানি ও গোশত দান দুটি ভিন্ন আমল। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইখলাসের সঙ্গে পশু জবাই সম্পন্ন হলেই কোরবানির ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। আর কোরবানির গোশত বণ্টনের ক্ষেত্রে শরিয়তের নির্দেশনা হলো- নিজ পরিবার-পরিজনকে নিয়ে খাবে এবং পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, যারা কোরবানির সামর্থ্য রাখে না তাদেরও দান করবে। সহিহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ... (কোরবানির গোশত) তোমরা খাও, জমা করে রাখো এবং (গরিব-অসহায়দেরও) দান করো। (মুসলিম: ১৯৭১)
অন্য বর্ণনায় আছে, তোমরা খাবে এবং অন্যদেরও খাওয়াবে। (সহিহ মুসলিম: ১৯৭৩)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কোরবানির গোশত বণ্টনে সতর্কতা
তবে দানের ব্যাপারে কোরবানিদাতার উপর শরিয়ত কোনো বাধ্যবাধকতা আরোপ করেনি; বরং প্রত্যেককে তার অবস্থা অনুপাতে দান করতে বলা হয়েছে। অবশ্য সামর্থ্যবানদের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় উত্তম হলো- মোটামুটি তিন ভাগ করে এক অংশ গরিব-মিসকিন ও অসহায়দের দান করা, এক অংশ গরিব আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া। আর এক অংশ নিজের জন্য রাখা।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) তাঁর কোরবানির গোশতের তিন ভাগের এক ভাগ পরিবার-পরিজনকে দিতেন। আরেক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং এক ভাগ ভিক্ষুক ও অসহায়দের দান করতেন। (আল মুগনি: ১৩/৩৭৯)
বিজ্ঞাপন
এ বণ্টন পদ্ধতি উত্তম, জরুরি বা আবশ্যক নয়। তেমনি একেবারে ওজন করে তিন ভাগ করাও আবশ্যক নয়। বরং কোরবানিদাতার জন্য এতে তারতম্য করার অবকাশ রয়েছে। এটি যেহেতু একটি মোস্তাহাব আমল তাই সামর্থ্যবানদের এর উপর আমল করা উচিত। আর কারো পরিবারের সদস্য বেশি হলে কিংবা নিজেদের প্রয়োজন বেশি থাকলে সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের প্রয়োজন পরিমাণ গোশত রাখতে পারবে, এটা তাদের জন্য অনুত্তম হবে না।
(ফতোয়া তাতারখানিয়া: ১৭/৪৩৭; বজলুল মাজহুদ: ১৩/৪৩; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৮; তাবয়িনুল হাকায়েক: ৬/৪৮৬; ইলাউস সুনান: ১৭/২৬২)

