‘হজে মাবরুর’ বা ‘মাবরুর হজ’ হজের একটি পরিভাষা। মাবরুর শব্দটি শুধুমাত্র হজের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়; অন্য ইবাদতের ক্ষেত্রে হয় না। মাবরুর হজকে সহজ বাংলায় কবুল হজ বলা যায়। ‘মাবরুর’ আরবি শব্দ, যা ‘বিররুন’ শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো- কর্তব্য পালন করা, ভালো আচরণ করা, কারো সাথে ঝগড়া না করা, গুনাহ ও অশালীন কাজ না করা ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞদের ভাষায় মাবরুর শব্দটির বিভিন্ন অর্থ বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বটে; কিন্তু সব কথার সার একটিই। তা হলো- যাবতীয় গুনাহ ও অপছন্দনীয় কাজ থেকে বেঁচে থেকে হজের কাজ ও বিধি-বিধানগুলো ইখলাসের সঙ্গে যথাযথ আদায় করাকে বুঝায়।
বিজ্ঞাপন
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরা করো, কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ এমনভাবে দূর করে, যেভাবে হাঁপর লোহা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে। আর হজে মাবরুর (মকবুল হজ)-এর বিনিময় জান্নাত ব্যতীত কিছুই নয়।’ (ইবনে মাজাহ: ২৮৮৭)
আরও পড়ুন: নিজের হজকে মাবরুর হজে পরিণত করার উপায়
তাই প্রত্যেকে হজ পালনকারীই প্রত্যাশা করেন, তার হজটি যেন ‘হজে মাবরুর’ হয়। আর সে কারণেই কিভাবে পালনকৃত হজটি মাবরুর হবে—সে ব্যাপারে অনেকেই জানতে চান।
মাবরুর হজের জন্য প্রধান শর্ত হচ্ছে- নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা। ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার সঙ্গে হজের নিয়ত করা এবং শেষ অবধি বিশুদ্ধ নিয়ত ও একনিষ্ঠতার ওপর অবিচল থাকা। একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ পালন করা। সেইসঙ্গে হজের প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর পরিপূর্ণ অনুসরণ করা।
বিজ্ঞাপন
এ জন্য অযথা কথাবার্তা থেকে বিরত থেকে হজের পুরো সময়জুড়ে জিকির-আজকার ও ইবাদতে মশগুল থাকতে হবে। মানুষকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, গীবত-শেকায়েত, রিয়াসহ সকল প্রকার গুনাহ বর্জন করতে হবে এবং হজের আহকামগুলো যথাযথভাবে ভক্তি ও আন্তরিকতার সঙ্গে আদায় করতে হবে। মূলত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তেই এসব মেনে চলতে হবে। এতেই লাভ হবে কাঙ্ক্ষিত মাবরুর হজ।
আল্লাহ তাআলা মাবরুর হজের শর্তগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। প্রত্যেকের হজকে ‘হজে মাবরুর’ হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

