রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

হজ কার ওপর ফরজ

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ মে ২০২৪, ০২:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

হজ কখন ফরজ হয়

হজ ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর হজ ফরজ। পবিত্র কোরআনের ভাষায়, وَلِلهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا ‘মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ করা ফরজ।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)

সামর্থ্য বলতে হজের মৌসুমে হজে যাওয়া-আসার খরচ থাকতে হবে এবং একইসঙ্গে সফরের দিনগুলোতে নিজের ও পরিবারের লোকদের স্বাভাবিক খরচের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কারো যদি মক্কায় যাওয়া-আসার সামর্থ্য থাকে কিন্তু হজের সফরের সময় পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ নয়। দৈহিকভাবে হজ করার সক্ষমতা না থাকলেও হজ ফরজ হয় না। স্থাবর সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রয় করে কেউ যদি হজ আদায় করতে সক্ষম হয় এবং হজ থেকে ফিরে এসে বাকি সম্পত্তি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, তাহলেও তার ওপর হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম: ২/১৫২; আহসানুল ফতোয়া: ৪/৫১৬)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: হজ আদায় না করার ভয়াবহ শাস্তি

একইভাবে ব্যবসায়ীর দোকানে যে পরিমাণ পণ্য আছে, তার কিছু অংশ বিক্রয় করলে যদি হজ করা সম্ভব হয় এবং ফিরে এসে যদি বাকি পণ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা যায়, তাহলে তার ওপরও হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫৩)

তবে নারীদের হজ ফরজ হওয়ার জন্য সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষ সাথে থাকা শর্ত। (ফতোয়ায়ে শামি: ২/৪৫৫) মাহরাম না থাকলে সামর্থ্য থাকার পরও নারীদের ওপর হজ ফরজ হবে না। আবার মাহরামের খরচ বহনের সামর্থ্য না থাকলেও নারীদের ওপর হজ ফরজ নয়। তবে, মাহরাম যদি ফরজ হজ করতে যায়, সেক্ষেত্রে তার সঙ্গে গেলে খরচ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। (বাহরুর রায়েক: ২/৩৩৯)

হজ জীবনে একবারই ফরজ। কেউ যদি একাধিকবার করে, তবে তা হবে নফল হজ।’(বুখারি: ৭২৮৮)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: হজের গুরুত্ব ও ফজিলত

কারো ওপর হজ ফরজ হলে তার দ্রুত হজ আদায় করে নেওয়া উচিত। অযথা দেরি না করতে বলেছেন নবীজি (স.)। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি হজ করার ইচ্ছে করেছে, সে যেন তাড়াতাড়ি তা করে নেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৭৩২)

হজ অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। হজ কবুল হলে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মাবরুর হজের বিনিময় হলো জান্নাত। মাবরুর হজ বলতে হজের কাজ ও বিধি-বিধানগুলো যথাযথা আদায় করাকে বুঝায়। (বুখারি: ১৭৭৩; মুসলিম: ১৩৪৯; আহমদ: ৭৩৫৪; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৬৯৫) 

ফরজ হজ না করার পরিণাম ভয়াবহ। তাদের বিষয়ে তাফসিরে এসেছে, তারা ইহুদি হয়ে মৃত্যুবরণ করল কি খ্রিস্টান হয়ে, তার কোনো পরোয়া আল্লাহর নেই।’ (ইবনে কাসির: ১/৫৭৮) হাদিসে কুদসিতে এসেছে, ‘যে বান্দাকে আমি দৈহিক সুস্থতা দিয়েছি এবং আর্থিক প্রাচুর্য দান করেছি, অতঃপর (গড়িমসি করে) তার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে যায় অথচ আমার দিকে (হজব্রত পালন করতে) আগমন করে না, সে অবশ্যই বঞ্চিত।’ (ইবনে হিব্বান: ৩৭০৩)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের বিধান উপলব্ধি করার এবং হজ ফরজ হলে তা যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর