পবিত্র রমজানের ১০ম দিন শেষ হলো আজ। রাতে এশার নামাজের পর পড়া হবে ১১তম রমজানের তারাবি। রমজান মাসের অন্যতম আমল হলো কোরআনুল কারিম খতমের মাধ্যমে তারাবি নামাজ আদায়। ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত ১১তম তারাবিতে দেশের প্রায় সব মসজিদে আজ পড়া হবে সুরা হিজরের ২ নম্বর আয়াত থেকে সুরা নাহলের ১২৮ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। পারা হিসেবে তেলাওয়াত করা হবে ১৪তম পারা।
চলুন একনজরে দেখে নিই- আজকের খতম তারাবিতে কী তেলাওয়াত করা হবে।
বিজ্ঞাপন
সুরা হিজর, আয়াত ২-৪৪
হাশরের ময়দানে কাফেরদের পরিণতি কেমন হবে তা আলোকপাত করা হয়েছে। কাফেররা রাসুল (স.) এর সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করছে, পূর্ববর্তী নবীদের সঙ্গেও অনুরূপ আচরণ করেছে। তাই নিরাশ না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। বলা হয়েছে এই বিশ্বচরাচর ও তার নিজের মাঝে অসংখ্যা নেয়াতম রাজি ছড়িয়ে আছে এসব স্মরণ কর ও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। হজরত আদমকে (আ.) কীভাবে সৃষ্টি করেছেন, তার মর্যাদা কত ওপরে তুলে ধরেছেন, ইবলিস অহংকারের কারণে কীভাবে ধ্বংস হয়েছে, তা-ও বলা হয়েছে। যেন মানুষ নিজের মর্যাদা বোঝে এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
আরও পড়ুন: ১০ম তারাবিতে যা পড়া হবে
সুরা হিজর, আয়াত ৪৫-৭৯
হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর কাছে মেহমান বেশে দু’জন ফেরেশতার আগমন প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। ফেরেশতারা হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) সন্তান জন্মের সুসংবাদ দেওয়ার পর বলেছেন, আমরা লুত (আ.) এর কওমের কাছে যাচ্ছি। তাদের আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেব। এখানে লুত (আ.)-এর কওমকে আজাবের ঘটনা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তারপর হজরত শোয়াইব (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের ঘটনা বলে রুকু শেষ করা হয়েছে।
সুরা হিজর, আয়াত ৮০-৯৯
আলোচ্যবিষয় হলো সামুদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দেয়ার ঘটনা, মক্কার কাফেরদের বিরোধিতা দেখে যেন রাসুল (স.) হতাশ না হয়ে পড়েন সে সম্পর্কে উৎসাহ প্রদান ইত্যাদি। শেষে বলা হয়েছে- আর আপনার মৃত্যু আসা পর্যন্ত আপনি আপনার রবের ইবাদাত করুন।
বিজ্ঞাপন
সুরা নাহল, আয়াত ১-২৫
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিভিন্ন নেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন। মানুষকে বলেছেন, আমার অনুগ্রহ তোমরা যদি গণনা কর তারপরও শেষ হবে না। তাই আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত কর না। তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। তারই দাসত্ব কর। কাফেরদের ব্যাপারে বলা হয়েছে- তারা কেয়ামতের দিনে নিজদের পাপের বোঝা পুরোটাই বহন করবে এবং তাদের পাপের বোঝাও যাদেরকে তারা অজ্ঞতা হেতু পথভ্রষ্ট করে। তারা যা বহন করবে, তা কতই না নিকৃষ্ট!
আরও পড়ুন: ৯ম তারাবিতে যা পড়া হবে
সুরা নাহল, আয়াত ২৬-৪০
বলা হয়েছে যারা দুনিয়াতে আল্লাহকে ভয় করে জীবনযাপন করে, তাদেরকে তাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। তারা সঠিক জবাব দিতে পারবে। ওই জবাবের ভিত্তিতে তাদেরকে সুখময় জান্নাত দান করা হবে। আর যারা আল্লাহকে ভয় করে জীবনযাপন করবে না, তাদেরকে যতই বলা হোক না কেন, তারা আল্লাহর রঙে জীবন রাঙাবে না। তাদের জন্য পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব।
সুরা নাহল, আয়াত ৪১-৬০
মুহাজিরদের মর্যাদা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। আর যারা সত্য অস্বীকার করে তাদেরকে সহজ কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে অন্তরে সত্যবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে। শিরক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৮ম তারাবিতে যা পড়া হবে
সুরা নাহল, আয়াত ৬১-৮৯
শিরকের অসারতা ও তাওহিদের যৌক্তিকতা বর্ণনা করা হয়েছে। সহজে বোঝানো জন্য কিছু উদাহরণ প্রদান করা হয়েছে, যা নিয়ে চিন্তা করলে মানুষের বিবেক নাড়া দেবে। সত্য অস্বীকারকারী পার্থিব জীবনে সত্যকে স্বীকার করলে পরকালে তাদের বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। সেদিন তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সুরা নাহল, আয়াত ৯০- ১২৮
মুসলিম উম্মাহকে শরিয়তবিরোধী কোনো কাজে জড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে। মুসলমানদের বিশেষ নসিহত করা হয়েছে, যাতে পরকালের পাকড়াও থেকে তারা বাঁচতে পারে। বিশ্বাসীদের জন্য জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর জীবনাদর্শ তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর ধর্ম ও হজরত মুহাম্মদ (স.) এর ধর্ম এক এবং অভিন্ন।