অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও অজু বা গোসলের সময় যদি পানি গলার ভেতরে চলে যায় কিংবা নাক দিয়ে খাদ্যনালিতে তা প্রবেশ করে, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে এর দ্বারা শুধু রোজার কাজা আদায় করতে হবে, কাফফারা প্রযোজ্য নয়। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬/২৬০; ফতোয়া খানিয়া: ১/২০৯; ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/২০২; আলবাহরুর রায়েক: ২/২৭১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০১)
তাই রোজা অবস্থায় অজু গোসলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যেন নাক-কান-গলায় পানি প্রবেশ করতে না পারে। লাকিত ইবনে সাবিরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- بالغ في الاستنشاق، إلا أن تكون صائما ‘(অজু-গোসলের সময়) ভালোভাবে নাকে পানি দাও তবে রোজা অবস্থায় নয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৬৩; সুনানে তিরমিজি: ৭৮৫)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: গোসল ফরজ অবস্থায় সেহেরি খেলে রোজা হবে?
তবে, যদি রোজার কথা স্মরণ না থাকে এবং স্মরণ না থাকার কারণেই গড়গড়া করা হয় এবং গলায় পানি চলে যায়, এতে রোজা ভাঙবে না। সুতরাং ওই রোজার কাজা-কাফফারা কোনোটিই আদায় করতে হবে না। কারণ, ভুলে পানাহার করলেও রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল; সে যেন তার রোজা পূর্ণ করে। কারণ, আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।’ (সহিহ মুসলিম: ১/২০২)
আরও পড়ুন: সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভাঙলে কাফফারার নিয়ম কী
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে আছে, ‘যে রমজান মাসে ভুলে পানাহার করল, তার ওপর কোনো কাজা নেই; কোনো কাফফারাও নেই।’ (ইবনে হিব্বান: ০৮/২৮৮; হাকিম: ০১/৪৩০; সহিহুল জামি: ৬০৭০)
এমনকি ভুলবশত স্ত্রী সহবাস করলেও রোজা ভাঙে না। অবশ্য, স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে তা থেকে বিরত থাকতে হব। (রদ্দুল মুখতার, খণ্ড: ০৩, পৃষ্ঠা: ৩৬৫)
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য রোজা রেখে কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া নিষেধ নয়। তবে, গড়গড়া করে কুলি করা এবং নাকের পানি জোড়ে টান দেওয়া যাবে না। (আবকে মাসায়েল আউর উনকা হল: ২৮৩)
অতএব, রোজাবস্থায় এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ সুন্নাহ মেনে রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

