বিভিন্ন কারণে তোশক, কম্বল, বিছানা অপবিত্র হতে পারে। যেমন- স্বপ্নদোষের কারণে বা সহবাসে অসতর্কতার কারণে কিংবা বাচ্চাদের পায়খানা-প্রস্রাব লাগার কারণে নাপাকি লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নাপাকি দূর করার মাধ্যম ও পদ্ধতি কী হবে জানতে চান অনেকে।
এর উত্তর হলো- বীর্যের ক্ষেত্রে তা শুকনো হলে খুঁটিয়ে তুলে ফেলা ও ভেজা হলে কাপড়টি ধৌত করে পবিত্র করতে হবে। যেমন হাদিসে এসেছে, আমার বিন মাইমুন (রহ.) সুলাইমান বিন ইয়াসার (রা.)-কে বীর্য লাগা কাপড়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘আমি রাসুল (স.)-এর কাপড় থেকে তা ধুয়ে ফেলতাম। তারপর তিনি নামাজের জন্য বের হতেন এমতাবস্থায় যে, কাপড়ে পানির ছাপ লেগে থাকত। (সহিহ বুখারি: ২৩১, ২২৯)
বিজ্ঞাপন
অন্য হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা- এক. পায়খানা, দুই. প্রস্রাব, তিন. বমি, চার. রক্ত, পাঁচ. বীর্য। (সুনানে দারা কুতনি: ৪৫৮)
আরও পড়ুন: কাপড়ে দুধের শিশুর প্রস্রাব লাগলে নামাজ হবে?
ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বলেন, ‘বীর্য সিক্ত থাকলে তা ধুয়ে ফেল, আর শুকিয়ে গেলে তা খুঁটিয়ে ফেল।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ৯৩৩)
বীর্য শুকিয়ে গেলে সেই বিছানা না ধুয়ে সেখানে ঘুমানো যাবে। সেই বিছানায় ঘুমালে কাপড় ও শরীর নাপাক হবে না। তবে মনে রাখা উচিত- পবিত্র বিছানায় ঘুমানো রাসুলুল্লাহ (স.)- এর আদর্শ।
বিজ্ঞাপন
কাঁথা-কম্বলের এক অংশ নাপাক হলে এর পাক অংশে নামাজ পড়া জায়েজ আছে। আর ভারী তোশক বা জাজিমের এক পিঠে নাপাকি লাগলে অপর পিঠে যদি নাপাকির রং বা আর্দ্রতা প্রকাশ না পায় এবং গন্ধও পাওয়া না যায়— তাহলে পরিষ্কার পিঠে নামাজ পড়া যাবে।
আরও পড়ুন: সহবাস করলে পোশাক কি নাপাক হয়?
জাজিম ও তোশক ইত্যাদি যেগুলো ধোওয়া যায় না, সেগুলোতে নাপাকি লেগে গেলে শুকিয়ে যাওয়ার পর তার উপর জায়নামাজ বা কাপড় বিছিয়ে তা ব্যবহার করা যাবে এবং নামাজ পড়া যাবে ।
প্রস্রাব-পায়খানা যদি তোশকের উপরের আবরণে লেগে থাকে এবং ভেতরে প্রবেশ না করে, তাহলে তা ঘষে তুলে ফেললে বা অন্যকোনোভাবে দূর করার দ্বারা পাক হয়ে যাবে অথবা তিনবার তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত করার মাধ্যমেও পাক হয়ে যাবে। কিন্তু যদি তোশক নাপাকি ভেতরে খুব ভালোভাবে চুষে নেয়, তাহলে তা তিনবার ধৌত করে প্রতিবার শুকাতে হবে। শুকানোর অর্থ হচ্ছে তার উপর হাত রাখলে যেন ভিজে না যায়।
আর ধৌত করার আগে নাপাকি পানি যদি গায়ে বা কাপড়ে লাগে তাহলে শরীর, কাপড় নাপাক হয়ে যাবে।
(তথ্যসূত্র: ফতোয়ায়ে শামি: ১/৩৩২; হালবাতুল মুজাল্লি: ১/৫৭১; আসসিআয়া: ২/৫৯; তাতারখানিয়া: ২/৩০; হিন্দিয়া: ১/৬২; রাদ্দুল মুহতার: ১/৪০২)

