সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

এক শিশুকে সন্তান দাবি দুই মায়ের, সোলাইমান (আ.)-এর বিচার

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৩, ০৬:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

prophet sulaiman

প্রসিদ্ধ নবী হজরত সুলাইমান (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা নবুয়ত, কর্তৃত্ব, প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দাউদ (আ.)-এর সন্তান। তিনি তাঁর বাবার রাজত্বের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। সোলাইমান (আ.)-এর বিভিন্ন প্রজ্ঞাপূর্ণ বিচার বাবা দাউদকে মেনে নিতে হয়েছিল। 

সোলাইমান (আ.)-এর এক বিচার সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘বকরির পালের মালিক ও শস্যক্ষেতের মালিকের মধ্যে পিতা দাউদ (আ.) যেভাবে বিরোধ মীমাংসা করেছিলেন, বালক সুলাইমান তাঁর চেয়ে উত্তম ফয়সালা পেশ করেছিলেন। ফলে দাউদ (আ.) নিজের আগের রায় বাতিল করে পুত্রের দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। (ভাবার্থ সুরা আম্বিয়া: ৭৮-৭৯)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: সুলাইমান (আ.)-এর কি জাদুর আংটি ছিল?

সুলাইমান (আ.)-এর গভীর প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি সম্পর্কে আরেকটি ঘটনা হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। ঘটনাটি ছিলো এরকম— এক শিশুকে নিজের সন্তান দাবি করে দুই মহিলার মধ্যে ঝগড়া চলছিল। দুজনেই দাবি করছিল যে, শিশুটি তার। বিচার গেল বাদশাহ দাউদ (আ.)-এর কাছে। দাউদ (আ.) ঘটনার সবকিছু জেনে-বুঝে বয়স্ক নারীর পক্ষে রায় দিলেন। কিন্তু এই রায়ে সন্তুষ্ট হননি কনিষ্ঠ নারী। তাদের সঙ্গে সোলাইমান (আ.)-এর সাক্ষাৎ হয়। তারা বিষয়টি সোলাইমান (আ.)-কে বললেন। সোলাইমান (আ.) যদিও জানলেন যে দাউদ (আ.) বিষয়টির নিষ্পত্তি করেছেন, তবুও তিনি তাদের কথা শুনলেন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্রসর হলেন। এক সুন্দর কৌশল অবলম্বন করলেন তিনি। উপস্থিত লোকদের বললেন একটি ছুরি আনতে। অতঃপর বাচ্চাটিকে দুই টুকরো করে দু’জনকে একেক টুকরা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। তখনই কনিষ্ঠ নারী চিৎকার করে উঠল- ‘টুকরো করতে হবে না, বাচ্চাটি আমার না, উনাকে দিয়ে দিন।’ তখন সোলাইমান (আ.)-এর বুঝতে বাকি রইল না যে, বাচ্চাটি আসলে কনিষ্ঠ মহিলারই। কেননা একজন প্রকৃত মা কখনও চাইবেন না যে, বাচ্চা মরে যাক। সন্তানকে প্রয়োজনে দূরে ঠেলে দেবেন, তবুও মরতে দেবেন না। এটাই একজন মায়ের পরিচয়। অতঃপর কনিষ্ঠ নারীটির পক্ষে রায় দিয়ে তার কোলে সোলাইমান (আ.) সন্তানটিকে তুলে দিলেন।

আরও পড়ুন: যে দোয়া পড়ে প্রতাপশালী বাদশাহ হয়েছিলেন সোলাইমান (আ.)

হাদিসে ঘটনাটি এভাবে বর্ণিত হয়েছে—‘দু’জন মহিলার দুটি সন্তান ছিল। একদিন নেকড়ে বাঘ এসে একটি বাচ্চা নিয়ে যায়। তখন প্রত্যেকেই বলল, তোমার বাচ্চা নিয়ে গেছে, যেটি আছে ওটি আমার বাচ্চা। বিষয়টি ফয়সালার জন্য ওই দুই মহিলা দাউদ (আ.)-এর কাছে এলো। তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলার পক্ষে রায় দেন। তখন তারা বেরিয়ে সুলাইমান (আ.)-এর কাছে আসে এবং সব কথা খুলে বলে। সুলাইমান (আ.) তখন একটি ছুরি আনতে বলেন এবং বাচ্চাটাকে দুই টুকরা করে দুই মহিলাকে দিতে চাইলেন। তখন কনিষ্ঠ মহিলা বলল, আল্লাহ আপনাকে অনুগ্রহ করুন, বাচ্চাটি ওই মহিলার। তখন সুলাইমান কনিষ্ঠ মহিলার পক্ষে রায় দিলেন।’ (বুখারি: ৬৭৬৯) 


বিজ্ঞাপন


এভাবে কৌশলে তিনি সত্য উদ্ঘাটন করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবী-রাসুলদের জীবনী থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর