সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নারীদের নাক ফোঁড়ানোর পক্ষে দলিল আছে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

নারীদের নাক ফোঁড়ানোর পক্ষে দলিল আছে?

নারীদের নাক ও কান ফোঁড়ানো নিয়ে নানা কথা শোনা যায়। কেউ বলে এটি আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন করার শামিল। কেউ আরেকটু বাড়িয়ে বলে- কেয়ামতের দিন তার নাক-কানে আগুনের লোহা দিয়ে ছিদ্র করা হবে। এসব কথা ভিত্তিহীন। মূলত অলংকার পরিধানের জন্য নাক-কান ছিদ্র করা নারীদের জন্য জায়েজ। 

তবে, এটি শরিয়তের কোনো জরুরি হুকুম নয়। তাই কেউ নাক-কান না ফোঁড়ালে তার গুনাহ হবে না। 


বিজ্ঞাপন


রাসুলুল্লাহ (স.)-এর যুগে নারীদের নাক-কান ফোঁড়ানোর কথা হাদিসে পাওয়া যায়। আব্দুর রহমান ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এক ব্যক্তিকে ইবনে আব্বাস (রা.)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি যে, আপনি আজহা বা ফিতরের কোনো ঈদে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কি? তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। অবশ্য তাঁর সঙ্গে আমার এত ঘনিষ্ঠতা না থাকলে স্বল্প বয়সের কারণে আমি তার সঙ্গে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বের হলেন। তারপর নামাজ আদায় করলেন, এরপর খুতবা দিলেন। ইবনে আব্বাস (রা.) আজান ও ইকামতের কথা উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি মহিলাদের কাছে এলেন এবং তাদেরকে ওয়াজ-নসিহত করলেন। তাদেরকে দান-সদকা করার আদেশ দিলেন। আমি দেখলাম, তারা তাদের কান ও গলার দিকে হাত প্রসারিত করে (কান ও গলায় পরিহিত গয়নাগুলো) হজরত বেলাল (রা.)-এর কাছে দিচ্ছে। এরপর রাসুলুল্লাহ (স.) বেলাল (রা.)-এর গৃহে গমন করলেন। (সহিহ বুখারি: ৫২৪৯)

আরও পড়ুন: সহবাসে সাড়া না দিলে স্ত্রী কি গুনাহগার হবেন?

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ঈদুল ফিতরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। এর পূর্বে ও পরে কোনো নামাজ আদায় করেননি। তারপর তিনি নারীদের কাছে আসলেন। সঙ্গে ছিল বেলাল (রা.)। তারপর তিনি নারীদের দান করতে আদেশ দিলেন। তখন নারীরা তাদের কানের দুল ও গলার হার দান করতে লাগল। (সহিহ বুখারি: ৯৬৪)

আরেকটি দীর্ঘ হাদিসের একাংশে এসেছে, … একাদশতম নারী বলল, আমার স্বামী আবু যারা। তার কথা আমি কী বলব? সে আমাকে এত অধিক গহনা দিয়েছে যে, আমার কান ভারী হয়ে গেছে। ...আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে বললেন, আবু যারা তার স্ত্রী উম্মে যারার জন্য যেমন আমিও তোমার প্রতি তেমন।’ (সহিহ বুখারি: ৫১৮৯)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: স্বামী-স্ত্রী কে কোন পাশে ঘুমানো সুন্নত?

অতএব, নারীদের কান-নাক ফোঁড়ানো জায়েজ। এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা হাদিসে বর্ণিত হয়নি। আবার না ফোঁড়ালেও গুনাহ নেই। কারণ, এটি অলঙ্ঘনীয় কোনো হুকুম নয়।

তবে নাক-কান ফোঁড়ানোর পর খেয়াল রাখতে রাখতে হবে, ফরজ গোসল ও অজুর সময় যেন অলংকার ভেদ করে চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছায়। না হলে তার অজু-গোসল কোনোটাই হবে না। 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে শরিয়তের সকল হুকুম-আহকাম সম্পর্কে জানার তাওফিক দান করুন। মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর