বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্ক বৈধতা পায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের জন্য শস্যক্ষেতস্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা আগমন করো।’ (সুরা বাকারা: ২২৩)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘শুধুমাত্র একই রাস্তায় সহবাস করা যাবে। (মুসনাদ আহমদ: ৭/৬১) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘স্ত্রীর কাছে আসো সম্মুখ ও পেছন উভয় দিক দিয়ে—যদি তা লজ্জাস্থান হয়।’ (তাবরানি: ৭/৬২)
বিজ্ঞাপন
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেন, আল্লাহ (কেয়ামতের দিন) ওই ব্যক্তির দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না যে তার স্ত্রীর পায়ুপথে সহবাস করে। (ইবনে মাজাহ: ৬৩৯)
নারীদের অপবিত্র অবস্থায়, রোজা রাখা অবস্থায় সহবাস করা যাবে না। এছাড়া সর্বাবস্থায় ও সবসময় সহবাস করা জায়েজ। কিন্তু স্ত্রী যদি সহবাস করতে বাধা দেয়, তাহলে কি স্ত্রীর গুনাহ হবে?
এর উত্তর হলো- স্ত্রী সুস্থ থাকলে স্বামীর আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার কারণে গুনাহগার হবেন। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘কোনো পুরুষ নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া না দেয় অতঃপর সে তার উপর রাগান্বিত হয়ে রাত্রি যাপন করে তাহলে ফেরেশতারা তার উপর লানত করতে থাকে যতক্ষণ না সে সকালে উপনীত হয়।’ (বুখারি: ৩২৩৭; মুসলিম: ১৪৩৬)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! কোনো ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া দিতে অস্বীকার করে তাহলে সেই সত্তা যিনি আকাশে রয়েছেন (আল্লাহ তাআলা) তার ওপর অসন্তুষ্ট হবেন যতক্ষণ না তার উপর তার স্বামী সন্তুষ্ট হয়।’ (বুখারি: ৩২৩৭, ৫১৫৩; মুসলিম: ১৪৩৬)
বিজ্ঞাপন
উল্লেখিত হাদিসগুলোর আলোকে বোঝা যায়- স্বামীর আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার কারণে স্ত্রীর বড় গুনাহ হবে।
তবে, যদি স্ত্রী অসুস্থ হয়, তাহলে সহবাসে বাধা দেওয়ার কারণে স্ত্রী গুনাহগার হবেন না এবং স্ত্রীকে ওই অবস্থায় কষ্ট না দেওয়া স্বামীর উচিত।
ইসলামি শরিয়তমতে, স্বাভাবিক অবস্থায় চার মাসে অন্তত একবার স্ত্রী সহবাস করা স্বামীর উপর ওয়াজিব। আর যদি স্ত্রী যুবতী হয়, স্ত্রীর চাহিদা বেশি হয়, তাহলে কমপক্ষে চার দিনে একবার করা উচিত।
(তথ্যসূত্র: রদ্দুল মুখতার: ৪/৩৮০; মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক: ৭/১৫২, নং: ১২৫৯৪; ফাতহুল মুলহিম: ৬/৫৯৯, নং: ৩৫২৪)