সম্মেলন সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীরা। ঘুরছেন নেতাদের দ্বারে দ্বারে। নিজেদের বিভিন্ন পদের দাবিদার হিসেবেও প্রচার করছেন। আর এই প্রচারণা দুই মেরুতে ঠেলে দিয়েছে সংগঠনের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃককে।
গত বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীরা। এ সময় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃকের অনুসারীরা তাকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেতাদের বলেন, আমরা মাহমুদা আপাকে এবার সভাপতি হিসেবে চাই। মাহমুদা বেগম কৃকের পক্ষে স্লোগানও দেন মহিলা আওয়ামী লীগের একদল নেত্রী।
বিজ্ঞাপন
আবার বর্তমান সভাপতিও নিজ পদে বহাল থাকতে চান। সাধারণ সম্পাদক কৃকের সভাপতি হতে চাওয়াটা সহজভাবে নিতে পারছেন না তিনি। যার প্রমাণ মিলল সেদিনই।
ওইদিন রাত ৯টা নাগাদ ধানমন্ডির ৯/এ তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের অফিসে দেখা গেল মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে। এ সময় তিনি সংগঠনের এক নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ভালই তো। মাহমুদার পক্ষে স্লোগান দাও। তাকে সভাপতি করতে চাও।
বিজ্ঞাপন
পরেও একাধিক সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেখা গেছে মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীদের। সংগঠনের এই দুই শীর্ষ পদের জন্য এখন তোড়জোড় বেশি।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেত্রীদের ভাষ্য, সভাপতি পদকে কেন্দ্র করে সংগঠনটি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একদল বর্তমান সভাপতিকে সভাপতি পদে বহাল চান। আরেক দল বর্তমান সাধারণ সম্পাদককে সভাপতি পদে চান।
তবে নিজেদের মধ্যে দূরত্বের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক। তিনি বলেন, এগুলো ভিত্তিহীন। আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে। আমরা সোমবার (১৪ নভেম্বর) বর্ধিত সভা করলাম। আজ (মঙ্গলবার) গণভবনে গেলাম। সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে গেলাম।
একই বিষয়ে জানতে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে চান তারাও
প্রায় ১৪ বছর পর ২০১৭ সালের ৪ মার্চ মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এতে সাফিয়া খাতুন সভাপতি এবং মাহমুদা বেগম কৃক সাধারণ সম্পাদক হন। তিন বছর মেয়াদি কমিটি কাটিয়েছে পাঁচ বছর। দীর্ঘ সময়েও সংগঠনের সব কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি তারা।
আরও পড়ুন: আ.লীগের তিন সংগঠনের সম্মেলন, ‘সালাম’ বেড়েছে নেতাদের
এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সুযোগ চান তুলনামূলক তরুণরা। সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন শিরীন নাঈম পুনম, তসলিমা চৌধুরী।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হয়ে হাল ধরতে চান বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিন সুলতানা। তিনি সংগঠনের ত্যাগী নেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া ঝর্ণা বাড়ৈও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। এ পদে আরও আলোচনায় আছেন বর্তমান কমিটির দফতর সম্পাদক রোজিনা নাছরীন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রোজিনা ১৯৯৩ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০১৭ সালে জায়গা পান মহিলা আওয়ামী লীগে।
একই পদ প্রত্যাশী বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রুকসানা, মোর্শেদা বেগম লিপি, দিলরুবা জামান ও সোহেলী পারভীন রানু। এ ছাড়া সম্পাদকীয় পদ থেকেও অনেকে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসার চেষ্টায় আছেন।
কারই/জেএম/এএস