আগামীকাল শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি। তবে এক দিন আগেই সমাবেশস্থল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, হাজার হাজার নেতাকর্মী সেখানে অবস্থান করছেন। আগামীকাল বিকেল পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।
শুক্র ও শনিবার গণপরিবহন ধর্মঘট শুরু হওয়ায় আগেভাগেই সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মী। খুলনা, রংপুরের সমাবেশের মতো এখানকার সমাবেশেও চিড়া, মুড়ি, চাল, ডালসহ মাঠে পৌঁছেছেন তারা। ভোলা, চরফ্যাশন, মনপুরা, পটুয়াখালী, বরগুনা, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা থেকেও ছুটে এসেছেন নেতাকর্মীরা। তারা জানান, পথে পথে নানা বাধার মুখে পড়েছেন, কিন্তু কোনো বাধাই তাদের আটকে রাখতে পারেনি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: বরিশালে রেকর্ড গড়ার টার্গেট বিএনপির
সমাবেশস্থলে আসা নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শুধু পরিবহন ধর্মঘট নয়, পথে পথে সরকার দলীয় লোকেরা হামলাও চালিয়েছে। এতে ভোলায় কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন বরিশাল। বাস, লঞ্চ, স্পিডবোট, মাইক্রোবাস সবই বন্ধ। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিভাগের বিভিন্ন জেলায় অসুস্থ রোগীরা উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তবে সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ পায়ে হেঁটে, ছোট ছোট নৌকা, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন বাহনে পথ ভেঙে সমাবেশস্থলে আসেন।
আরও পড়ুন: চার সমাবেশের পর আরও প্রত্যয়ী বিএনপি
বিজ্ঞাপন
বিকেলে দেখা যায়, খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মাঠে প্রবেশ ঢুকছেন নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত সমাবেশস্থল। এখনও চলছে মঞ্চ প্রস্তুতকরণের কাজ। রাত ১০টার মধ্যে মঞ্চের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বিমানে করে বরিশালে এসে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।
পটুয়াখালী থেকে সমাবেশে এসেছেন বিএনপি কর্মী ইকবাল হোসেন। সমাবেশ সফল করতে দুই দিন আগেই বরিশালে চলে আসেন তিনি। মাঠের এক পাশে তাঁবু টানিয়ে থেকেছেন গত রাত, আজ রাতও সেখানেই থাকবেন। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমাদের আটকাতে পরিবহন ধর্মঘট ডাকে। যার কারণে আমরা আগেই চলে এসেছি। দুই দিন যাবত এই মাঠে অবস্থান করছি। আজ রাতও এখানে থাকব। সমাবেশ সফল করে বাড়ি ফিরব। সঙ্গে করে চিড়া, মুড়ি, গুড় নিয়ে এসেছিলাম। গত দুই দিন এগুলো খেয়েই বেঁচে আছি।’
আরও পড়ুন: মাঠ গরম ও নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখার কৌশল বিএনপির
বরগুনা থেকে সমাবেশে এসেছেন ছাত্রদলের কর্মী ফয়সাল আহমেদ। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ধর্মঘটের কারণে আমরা ৩ নভেম্বর সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। তারপরও পথে পথে আসতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বরিশাল ঢোকার আগে আমাদের বহরের সামনের গাড়ি আটকিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। আমাদের একজনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে। পরে গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই সংবাদ পাওয়ার পর আমরা অন্য রাস্তা দিয়ে এখানে এসেছি।’
চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিম হত্যার প্রতিবাদে বিভাগীয় শহরে এই কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এছাড়া আগামী ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী ও ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে দলটি।
এমই/জেবি