বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪, ঢাকা

বিএনপির যেসব নেতার ঈদ কাটবে কারাগারে

বোরহান উদ্দিন
প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বিএনপির যেসব নেতার ঈদ কাটবে কারাগারে
বিএনপি নেতাদের কয়েকজন, যাদের ঈদ কাটবে কারাগারে। ছবি কোলাজ: ঢাকা মেইল

আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বছরের পর বছর ধরে কারাগারে। বয়সের ভার আর রোগে-শোকে জর্জরিত বিএনপির এই নেতাদের বহু ঈদ কেটেছে কারাগারে। এবারের ঈদুল ফিতরও সেখানেই কাটবে। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির শুধু এই দুই নেতাই নন, কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের অনেক প্রভাবশালী নেতার ঈদ কাটবে কারাগারে। সঙ্গে তৃণমূলের অনেক কর্মীরও পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হবে না।

দলটির নেতাকর্মীরা বলছেন, আন্দোলন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে সাজাপ্রাপ্ত অনেককে আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী পুরোনো মামলায় কারাগারে আছেন। আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে আর জামিন মেলেনি তাদের।


বিজ্ঞাপন


ঈদের আগে অবশ্য দলের পক্ষ থেকে কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরাও অপেক্ষায় ছিলেন পরিবারের কর্তাব্যক্তিকে নিয়ে তারা ঈদ করবেন। কিন্তু সেই সুযোগ হয়নি। কারণ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক জনপ্রিয় নেতার জামিন মেলেনি। ফলে পরিবারের লোকদের কণ্ঠেও আক্ষেপের সুর।

বাবাকে ছাড়া ঈদ করা নিয়ে আক্ষেপের কথা জানিয়ে সম্প্রতি কারাগারে যাওয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের মেয়ে জান্নাতুল ইলমী সূচনা বলেছেন, ‘৪৯০টিরও বেশি মামলায় কেরানীগঞ্জের কারাগারে আছেন বাবা। বছরের ছয় মাস জেল কিংবা ছয় মাস পলাতক থাকেন, ফলে কোনো উৎসব আয়োজনে বাবাকে পাওয়া যায় না। সন্তান হিসেবে বাবার দেখা মেলে না।’

আরও পড়ুন

আশায় আশায় বছর কাটল বিএনপির

দম নিচ্ছে বিএনপি, মাঠে চায় মিত্ররা

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে বিএনপি?

অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, দলের জনপ্রিয় নেতাদের মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখছে সরকার। নির্ধারিত সময়ে মামলায় হাজিরা দিলেও অনেককে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


গত অক্টোবরে নয়াপল্টনের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ যেসব কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার হয়েছিলেন, তাদের বেশিরভাগ এখন মুক্ত। তবে এর আগে এবং পরে বিভিন্ন সময় নতুন-পুরাতন মামলায় কেন্দ্রীয় অনেক নেতা কারাগারে গেছেন। ঈদের আগে তাদের মুক্তির কোনো সুযোগ নেই।

BNP22

পুরনো মামলায় হাজিরা দিতে গেলে গত ৩১ মার্চ কারাগারে পাঠানো হয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ অঙ্গ সংগঠনের ৫১ জন নেতাকর্মীকে।

মোসাদকাণ্ডে ফেঁসে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। ২০১৬ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে কারাগারে তিনি। এরপর থেকে শুরু হয় একের পর এক পেন্ডিং মামলা। একটিতে জামিন হলে আরেকটি জামিন না হওয়ায় মুক্তিও মেলে না।

এছাড়াও কারাগারে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ মিয়া নুরুদ্দিন অপু। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

জানা গেছে, অপুর একমাত্র ছেলে আজানের বয়স এখন ছয় বছর। জন্মের পর থেকে বাবার সঙ্গে তার ঈদ করা হয়নি।

এর বাইরেও কারাগারে আছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীর মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গেছেন।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর