অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার, হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মি আহম্মেদের পক্ষের সমর্থকরা নির্বাচনী ক্যাম্প বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের ১২২ (বরিশাল-৪) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর তিনি এই অভিযোগ করেন।
বিজ্ঞাপন
পরে সংবাদিকদের পঙ্কজ বলেন, ‘ড. শাম্মি আহম্মেদ দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে প্রার্থিতা হারিয়েছেন। সবকিছু শেষে তার প্রার্থিতা এখনো হাইকোর্টে রিভিউয়ে আছে। কিন্তু তারপরও তার সমর্থকরা মিছিল করছে এবং আমার সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’
অভিযোগপত্রে পংকজ নাথ বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা-১২২, বরিশাল-৪ এ নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ প্রতীকধারী প্রার্থী আমরা তিনজন। এর মধ্যে আমি পংকজ নাথ (ঈগল), মিজানুর রহমান এবং হৃদয় ইসলাম চুন্নু (ছড়ি) অংশগ্রহণ করছি। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মি আহম্মেদ দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে প্রার্থিতা হারিয়েছেন। আমাদের এই আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী নেই। অথচ হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক পদধারী কিছুসংখ্যক দুর্বৃত্ত চলমান দ্বাদশ নির্বাচনী পরিবেশকে বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মেহেন্দীগঞ্জের উলানীয়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলন চৌধুরীর নেতৃত্বে লালগঞ্জ বাজারে কিছুসংখ্যক সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাম্মি আহমেদের পক্ষে মিছিল করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্থানীয় নির্বাচনী ক্যাম্প বন্ধ করে দেয়।’
বিজ্ঞাপন
পঙ্কজের অভিযোগ, ‘গত ২২ ডিসেম্বর উলানিয়া উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জামাল মোল্লার নেতৃত্বে শাম্মি আহমেদের পক্ষে মিছিল করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে, আমার বিরুদ্ধে অশ্রাব্য অশালীন ভাষা ব্যবহার এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়। ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের ট্যাকের বাজারে সন্ত্রাসী বাহিনী ঝন্টু বেপারী, সালাউদ্দিন রাড়ী, আব্দুল করিম কবির, তানভীর মীর, কাউসারসহ আরও ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী মিলে আমার কর্মী অহিদ সরদারকে রক্তাক্ত জখম করে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং ঈগল মার্কার অফিস ভাঙচুর করে।’
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, ‘বিগত ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চরএককরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল মুকিম তালুকদার, খোরশেদ বেপারী, জাহাঙ্গীর কমিশনার, আবুল হোসেন আকন, আওলাদ হোসেন আকন, মাজেদ তালুকদার, শাকিল বেপারী, রিপন জমাদ্দারসহ বেশকিছু সন্ত্রাসী-দুর্বৃত্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরএককরিয়া ইউনিয়নের দাদপুর তেমুহনি বাজারে নৌকার মিছিল করে এবং তেমুহনি বাজার থেকে পাতারহাট বাজার পর্যন্ত শতাধিক হোল্ডার মহড়া দিয়ে নৌকার স্লোগান দেয় এবং ঈগল মার্কার সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারে বাধা ও ভয়ভীতি প্রদান করে শান্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।’
পঙ্কজের অভিযোগ, বিগত ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর আগে উল্লিখিত একই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীসহ আলিমাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পির নেতৃত্বে মাঝকাজি বাজারে শাম্মি আহমেদের পক্ষে মিছিল করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজ সকালে (২৪ ডিসেম্বর) হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের আলীগঞ্জ বাজারে ঈগল মার্কার প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করার সময় সন্ত্রাসী বাহিনী জামাল ঢালী, রবি ঢালী, সালাউদ্দিন সালা, নিজাম, রফিক ঢালী, আফসার, বাবুসহ ৫০/৬০ জন হামলা চালায় এবং আলিগঞ্জ বাজার মন্দির কমিটির সভাপতি রামপ্রসাদ-এর বাড়ি ভাঙচুর করে।
আবেদনে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পঙ্কজ।
বিইউ/জেবি