শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

এক আদর্শ বাবার স্বপ্নপূরণ ও অনন্তকালের জন্য বাবাকে হারিয়ে ফেলা

আকাশ উর রহমান
প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

এক আদর্শ বাবার স্বপ্নপূরণ ও অনন্তকালের জন্য বাবাকে হারিয়ে ফেলা
প্রতীকী ছবি

দিনটি ১৯ নভেম্বর, ২০২২। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। ঢাবি থেকে সদ্য গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা ছেলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে সুদূর কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় আসেন একজন আদর্শ বাবা। হ্যাঁ, আমি আমার বাবার কথাই বলছি। আমার বাবা আমার আদর্শ, আমার অনুপ্রেরণা, আমার সুপার হিরো।

ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে যিনি হাজারো ত্যাগ স্বীকার করেছেন। যে মানুষটার হাত ধরেই প্রথম কুষ্টিয়া সদরের একটি প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হওয়া। অতঃপর স্কুল ও কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। বটবৃক্ষের মতো ছায়া হয়ে বাবা থেকেছেন সবসময়। অনুপ্রেরণা দিয়েছেন সৎ ও নৈতিক মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার।


বিজ্ঞাপন


>> আরও পড়ুন: এ যেন শকুনের চোখে আগুন!

সৎ ও বিনয়ী মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার শিক্ষা আমার বাবা আমাদের শিখিয়েছেন। আর বাবার সঙ্গে ছায়া হয়ে সবসময় থেকেছেন আমার মা। দুইজনে হাজারো ত্যাগ স্বীকার করেছেন শুধু সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য এবং হয়েছেন সফল। আমার বড় বোন স্নাতকোত্তর শেষ করে কলেজের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত, আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন এবং ছোট ভাই কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। বাবা-মার দোয়া ও সৃষ্টিকর্তার রহমত ব্যতীত আমাদের এতদূর পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে আমার বাবার প্রচণ্ড ইচ্ছা, অনুপ্রেরণা ও দিক-নির্দেশনা আমাদের সাহস যুগিয়েছে সামনে এগিয়ে যেতে।

কিন্তু হঠাৎ নেমে এলো আমাদের জীবনে এক কালো অধ্যায়। সমাবর্তন শেষ হওয়ার এক মাস পর ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে বাবা না ফেরার দেশে চলে গেলেন। আকস্মিকভাবে বাবার এভাবে অনন্তকালের জন্য আমাদের রেখে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া কষ্টকর। তবুও সৃষ্টিকর্তাপ্রদত্ত মৃত্যু নামক এই কঠিন বাস্তবতা মেনে নিতে হচ্ছে।

>> আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বিড়াল ফ্লসি


বিজ্ঞাপন


মাথার ওপর থেকে বটবৃক্ষকে হারিয়ে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে চলতে হবে জীবনের পরবর্তী ধাপগুলো। প্রতিটি পদক্ষেপে বাবার শূন্যতা প্রবলভাবে অনুভূত হয়। সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের কষ্ট ও ত্যাগের প্রতিদান কখনো দেওয়া সম্ভব নয় এবং বর্ণনা করেও শেষ করা যাবে না।

মহান সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সকল বাবা-মাকে সুস্থ রাখুন ও ভালো রাখুন। সন্তানের সফলতা সকল বাবা-মাকে দেখার সৌভাগ্য ও ভোগ করার তৌফিক সৃষ্টিকর্তা দান করুন।

লেখক: শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর