রাজউক ও সিটি করপোরেশনের তদারকি নিয়ে প্রশ্ন
অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই ৮০/৯০ শতাংশ ভবনে
পুরান ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি
দীর্ঘদিন ধরে হয় না ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা হালনাগাদ
ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার সঙ্গে নেই বাস্তবের কোনো মিল
ঢাকা এখন শুধু জনবহুল নয়, বরং ‘উচ্চঝুঁকির শহর’ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। আকাশচুম্বী ভবনের আড়ালে লুকিয়ে আছে অজস্র ঝুঁকি আর আতঙ্ক। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীর ৭৪ শতাংশ ভবন নকশা অনুযায়ী নির্মিত হয়নি। অথচ রাজউক ও সিটি করপোরেশনের তদারকি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ফলে অনুমোদনহীন, নকশাবহির্ভূত এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। শহরের ৮০–৯০ শতাংশ ভবনে নেই প্রয়োজনীয় অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিজ্ঞাপন
পুরান ঢাকার ঘনবসতি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। অথচ রাজউক ও সিটি করপোরেশন সেখানে কার্যকর তদারকি করতে পারেনি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকাও দীর্ঘদিন হালনাগাদ হয়নি। সরকারি হিসেবে চিহ্নিত মাত্র ৩০০ ভবন, অথচ বাস্তবে দশ হাজারেরও বেশি। তালিকা থাকলেও বাস্তবায়নে নেই শৃঙ্খলা। অনুমোদনহীন ভবন ভাঙা বা সেফটি মানার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাজধানীবাসী প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে বসবাস করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজউক ও সিটি করপোরেশন উভয়ের সমন্বয়ের অভাব, দায়িত্বহীনতা এবং অসহযোগিতাই এই বিপদের মূল কারণ।
আরও পড়ুন: আয়ের সিংহভাগ ‘গিলে নিচ্ছে’ বাড়িভাড়া
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) জানিয়েছে, ২০০৯ সালের সিডিএমপি–জাইকা জরিপ অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকায় প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে যেতে পারে। এছাড়া আরও এক লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন
রাজউকের তথ্য অনুযায়ী, চার থেকে ৩০ তলার প্রায় ছয় লাখ বহুতল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনগুলো নির্মাণের সময় প্রয়োজনীয় নীতিমালা মানা হয়নি। ২০১০ সালে প্রথম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হয় এবং ২০১৮ সালে তা হালনাগাদ করা হয়। হালনাগাদ তালিকায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৩২১টি ভবন। এর মধ্যে সুত্রাপুরে রয়েছে ১৪৬টি, কোতয়ালিতে ১২৬টি এবং লালবাগে ২৮টি। বাকি ২১টি ভবন রয়েছে মোহাম্মদপুর, ডেমরা, মিরপুর, রমনা, তেজগাঁও, মতিঝিল ও ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায়।
বাসিন্দারা নিজেদের জীবন নিরাপদে রাখতে জানাচ্ছেন, কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া রাজধানীতে থাকা এখন প্রতিদিনের একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। নাগরিকদের সচেতনতা থাকা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণহীন নগরায়ন, অনুমোদনহীন ভবন এবং প্রশাসনের দায়বোধহীনতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের পিলারে ‘হাতির’ ধাক্কা!
ফাটল ও আতঙ্ক
গত দুই সপ্তাহে বেশ কয়েক বার ভূমিকম্পে কেঁপেছে রাজধানী। এর মধ্যে ২১ নভেম্বর ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়; যা ছিল রাজধানীবাসীর জন্য বড় আতঙ্কের। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভবনে ফাটলও দেখা গেছে। ধানমন্ডি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, বাড্ডা—সবখানেই ভবন কেঁপেছে। পলেস্তারা খসে পড়েছে, কোথাও রেলিং ভেঙেছে।

উত্তর বাড্ডার এক বাসিন্দা জানান, চাবির রিং নড়ার মতো শব্দ হচ্ছিল। পরে ঘরের আসবাবপত্র দুলতে শুরু করে। সবাই আতঙ্কে বাইরে বের হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বিভিন্ন অংশেও পলেস্তারা খসে পড়েছে। পুরান ঢাকার কেপি ঘোষ স্ট্রিটে পাঁচতলা ভবন থেকে রেলিং পড়ে পথচারীরা আতঙ্কিত হয়েছেন।
নিউমার্কেট থানার ওসি এ কে এম মাহফুজুল হক বলেন, থানার ভবনের বিভিন্ন তলায় ফাটল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
সুত্রাপুর ও কলাবাগান এলাকায় দুটি ভবন হেলে পড়েছে। আরমানিটোলা ও খিলগাঁওয়ের কয়েকটি বহুতল ভবন থেকে ইট ও পলেস্তারার অংশ খসে পড়েছে।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানিই সংকট উত্তরণের পথ
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই অধিকাংশ ভবনে
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ঢাকার ৮০–৯০ শতাংশ ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের পরিদর্শনে তারা ২,৬০৩টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শুধু বিপণি বিতানগুলোই ৫৮টি; এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫টি, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ ১৪টি, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ৯টি।
২০২৪ সালে জাতীয় পর্যায়ের পরিদর্শনে দেখা যায়, ১,১৮১টি বহুতল ভবনের মধ্যে ৩৬৭টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৭৪টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিস মালিকদের সতর্ক করলেও বাস্তবায়ন কম। অনেক মালিক সিঁড়ির জায়গা দখল করে রেখেছেন, জরুরি নির্গমন পথ নেই, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র পুরোনো বা অকেজো।

নির্দেশনা আছে, বাস্তবায়ন নেই
রাজউক প্রায়ই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করে ভাঙার নির্দেশ দেয়, কিন্তু বাস্তবায়ন সীমিত। গত ১০ বছরে যতগুলো ভবন ভাঙার নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তার এক-চতুর্থাংশও ভাঙা হয়নি। উল্লেখযোগ্য ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে—কবি নজরুল কলেজের ছয়তলা ভবন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ভবন, পুরান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজের পাশের দোতলা ভবন।
আরও পড়ুন: বৃক্ষসেবার নামে ‘পার্ক দখল’
‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প: রাজউক অংশ’-এর মাধ্যমে ঢাকা অঞ্চলের ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩০টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়। মাউশি এসব ভবনের সামনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ সাইনবোর্ড লাগানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সংকট, পাঠদান বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা, কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণে এসব ভবন এখনো চালু রয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিএমডিপি ৪৪টি সরকারি ভবনকে আরও ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে ঘোষণা করে ভাঙার সুপারিশ করেছে, কিন্তু কোনো প্রকৃত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি
ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংকট দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, উদাসীনতা ও নিয়ন্ত্রণহীন নগরায়ণের ফল। বাংলাদেশ ভূমিকম্প কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, দেশ সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় রয়েছে। বিশেষ করে ত্রিভুজাকার ভারতীয়, ইউরেশীয় ও বার্মা প্লেটের চাপ বাড়ছে। সিডিএমপি ও জাইকার যৌথ জরিপে জানা গেছে, ঢাকায় সাত বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে শহরের ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে, আরও এক লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মূল দায় ভবন মালিকের। রাজউক অনুমোদন দেয়, কিন্তু মালিকরা তা মেনে চলছে না। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ ভবনে রূপান্তর হচ্ছে। এর দায় মালিকদেরই নিতে হবে। ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পের পর ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩০০টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত করতে পেরেছি। নিয়ম ভেঙে এবং অনুমোদিত নকশা না মেনে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউক ও ভবন মালিক উভয়েরই দায়িত্ব আছে।
চেয়ারম্যান বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিই। রাজউকে টাকার বিনিময়ে কোনো কাজ হয় না। রাজউক নিজে ভবনের নকশা ডিজাইন করে না। বাড়ির মালিকরা ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট দিয়ে নকশা করান এবং রাজউকের নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই নকশা জমা দেন। পরে যদি তারা নিয়ম ভাঙেন, তাহলে শাস্তি বা জরিমানা ভবন মালিকদেরই প্রাপ্য। এজন্য রাজউককে দায়ী করা যায় না।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, জরুরি সভা হলেও আগের মতো সময় পেরিয়ে গেলে পুনরায় কাজ স্থগিত হবে। রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা হাজার হাজার। ঝুঁকি জানা সত্ত্বেও অনেকেই বাসা বদলাতে পারছেন না। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, জরুরি ভিত্তিতে হালনাগাদ ও নির্ভরযোগ্য তালিকা তৈরি করা প্রয়োজন।
নগর পরিকল্পনাবিদরা সতর্ক করেছেন, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসিক হল, বহুতল মার্কেট—যেখানে জনসমাগম বেশি, সেসব এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন দ্রুত চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজউক, সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিসের মধ্যে সমন্বয় না হলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে বাঁচার উপায় থাকবে না। রাজধানীতে এই দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতা দেখাচ্ছে, যেকোনো বড় দুর্যোগে পুরো শহর ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে প্রাণহানির পরিমাণ ভয়াবহ হবে।

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) পরিচালক নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান ঢাকা মেইলকে বলেন, ঢাকাকে টেকসই ও নিরাপদ করতে হলে ভূমি ব্যবহার জোনিং, বিল্ডিং কোড, মাটির ভূতাত্ত্বিক পরীক্ষা, কাঠামোগত মূল্যায়ন, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কমিউনিটির প্রস্তুতি সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে। নয়তো বড় ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ড বা বড় দূর্যোগে রাজধানীর ওপর বিপর্যয় নেমে আনতে পারে। ভূমিকম্প প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। এজন্য জরুরি কঠোরভাবে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড ও নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিবিআরএ) গঠন করে দ্রুত বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সিসমিক মাইক্রো জোনেশন ম্যাপ অনুযায়ী নগরায়ন করতে হবে। জলাধার, জলাভূমি ভরাট করে কোনো সরকারি-বেসরকারি উন্নয়নই অনুমোদন করা যাবে না। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঝকঝকে হাতিরঝিলের ‘বেহাল দশা’
অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় কমিউনিটিকে প্রস্তুত করতে প্রশিক্ষণ, ড্রিল ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। স্বল্প আয়ের লোকদের নিরাপদ ও সাশ্রয়ী আবাসন এর জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি আবাসন ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। ভবন সংশ্লিষ্ট অনিয়মে যুক্ত কর্মকর্তা, সংস্থা বা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি কার্যকর করতে হবে। এখনই যদি ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে বিভাগীয় ও জেলা শহরে পরিকল্পিত নগরায়ন, নিরাপদ আবাসন, পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা এবং কর্মসংস্থানের সমান্তরাল নীতি নেওয়া যায়– তাহলে আগামী ১৫-২০ বছরে আমরা ঢাকাকে কিছুটা চাপমুক্ত করতে পারব।
আইপিডি উপদেষ্টা অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, চিলি-হাইতি-তুরস্কের ভূমিকম্পের উদাহরণগুলোই আমাদের স্পষ্ট দেখিয়ে দেয় ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে বিল্ডিং কোড অনুসরণের গুরুত্ব কতটুকু। আমাদের যেকোনো ভবন কিংবা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্যোগ ঝুঁকি কমানোর বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। ইমারত নির্মাণে সকল পর্যায়ে দুর্নীতিমুক্ত করা যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব, ঠিক তেমনি ভবন মালিক ও পেশাজীবীদেরও দায়বদ্ধ করতে হবে আমাদের।
এএইচ/জেবি

