রাজধানীর আদাবরে হামলা চালিয়ে এক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে আহত করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় পুরো আদাবর জুড়ে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১০২ জনকে আটক করেছে। তবে জনি ও রনি নামে দুই মূলহোতা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
এর আগে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১টায় আদাবরের সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ধরে কোপানো হয়। তাদের ব্যবহৃত গাড়িটিও ভাঙচুর করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।
স্থানীয়রা বলছেন, ভয়ংকর এই কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় না আনতে পারলে এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। যৌথ বাহিনী যেহেতু অভিযান চালিয়েছে, তাই তারা ক্ষোভে আরও ভয়ংকর রূপে হামলা চালাবে।
পুলিশের ওপর হামলার নেপথ্যে যারা
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার রাতে পুলিশ সদস্যদের উপরে হামলা চালিয়েছে আদাবরের ‘কবজি কাটা’ গ্রুপের সদস্যরা। এই গ্রুপের অন্যতম সদস্য জনি ও রনি ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলা হামলা চালায়। তাদের সঙ্গে ছিল নাজির, ওসমান, দাঁতভাঙ্গা সুজন, কবজি কাটা হৃদয় ও গাঁজা ব্যবসায়ী রাজুসহ আরও কয়েকজন।
ঢাকা মেইলের হাতে আসা একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আদাবর এলাকার একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১০ টা ৫১ মিনিটে একটি নির্মানাধীন বাড়ির টিনশেড গেইটের সামনে ২০-২৫ জন সশস্ত্র কিশোর গ্যাং সদস্য এসে জড়ো হয়। এ সময় তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল কবজি কাটা গ্রুপের সদস্য জনি ও রনি। কিশোর গ্যাং সদস্যরা এক মিনিট পর বাড়ির গেইট ভেঙে ভেতরে ঢুকে কাউকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর তারা তাকে না পেয়ে চলে যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া এ ঘটনাটি মূলত পুলিশ সদস্যদের কুপিয়ে আহত করার কিছুক্ষণ আগের। তারা এ সড়ক দিয়ে গণছিনতাই করতে করতে পুরো আদাবর এলাকায় মহড়া দেয়। ওই সময় নির্মাণাধীন বাড়ির গেইট ভেঙে ভেতরে ঢুকে চাঁদা দাবি করছিল। না দেওয়ায় জনি ও রনি বাড়ির কেয়ারটেকারসহ যারা ছিল, তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে যায়।
পুলিশ যা বলছে
ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, ‘সোমবার রাতে ৯৯৯-এ দুই পক্ষের গণ্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ একটি গাড়ি নিয়ে আদাবর এলাকায় যায় । চালক আল আমিন গাড়ির কাছে ছিলেন। এসময় একটা পক্ষ এসে তাকে কুপিয়ে আহত করে। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘এ ঘটনার পর রাতেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১০২ জনকে আটক করে। মূলহোতা যারা ছিল, তাদের আমরা গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।’
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে আদাবর থানার বারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাকারিয়া বলেন, ‘গতকাল রাতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্য হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। রাতে যৌথ অভিযানে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচজন সরাসরি জড়িত ছিল।’
তিনি জানান, ‘ঘটনার মূলহোতাদের গ্রেফতারের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করতে পারব বলে আশা করি।’
একেএস/এএইচ
