মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার ক্ষত এখনো দগদগে মানুষের মনে। তারই মাঝে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান শোনালেন সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অল্পে বেঁচে যাওয়ার গল্প। জানালেন, প্রধান শিক্ষিকা ডেকে না নিয়ে গেলে হয়তো তিনি পুড়ে অঙ্গার হতেন।
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন ইস্যুতে আর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করবে না বার্ন ইনস্টিটিউট
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানেই নিজের বেঁচে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর খান।
অধ্যক্ষ তার বক্তব্যে বলেন, ‘পৌনে দুই বছর ধরে আমি এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন একটার সময়, ছুটির সময় বাইরে যাই না। বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি।’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন ট্রাজেডি: জরুরি চিকিৎসা সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন
বেঁচে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি জানান, ‘ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন। বললেন, ১টার সময় দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। বেলা ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম। ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের দিকে দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।’

অধ্যক্ষ বলেন, ‘যে বাচ্চারা আমাদের ছেড়ে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই দুর্ঘটনা যদি ১টা ৪-৫ মিনিটের দিকেও হতো, তাহলে আমরা আরও অনেক কিছু হারাতাম। আরও বহু মা-বাবা সন্তানহারা হতেন। কারণ, স্কুল ছুটির পর প্রায় ১০ মিনিট লাগে বাচ্চাদের বের হতে।’
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে আ.লীগ অপরাজনীতি শুরু করেছে: এ্যানি
দুর্ঘটনার দিন উদ্ধারকাজে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কষ্ট, আপনাদের বেদনা সবকিছুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। যদি কারও মনে এতটুকুও মনে হয় অবহেলাজনিত কারণে, এর দায় একমাত্র আমার আর কারও নয়, আপনারা যেকোনো বিচার করতে পারেন।’
এদিন শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। শেষে নিহতদের স্মরণে দোয়া করা হয়।

গত ২১ জুলাই দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই ঘটনাস্থল মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। মনে হয় সেখানে কোনো বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন ট্রাজেডি: হতাহতের তালিকা করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কমিটি
ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন বিমানের পাইলট, দুজন মাইলস্টোনের শিক্ষিকা, একজন অফিস সহকারী এবং বাকি সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কোমলমতি শিক্ষার্থী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও কয়েকজন।
এএইচ

