ঈদুল আজহার লম্বা ছুটি চলছে। এই ছুটিতে রাজধানীর বেশির ভাগ হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। এতে ভাসমান মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, খেটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষ এবং যারা মেসে থাকেন তাদের খাবার খেতে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। যারা নিয়মিত কর্মসূত্রে বাইরে খাবার খান বা ভ্রমণে থাকেন, তাদের জন্য এই ছুটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের ছুটির দিনগুলোতে বেশির ভাগ রেস্তোরাঁ ও হোটেল তাদের সেবা সাময়িক বন্ধ রেখেছে। এতে যাত্রী, শ্রমিক, গৃহহীন ও দুঃস্থ মানুষদের জন্য খাদ্যের সংস্থান কঠিন হয়ে পড়েছে। আগামী শনিবার-রোববারের আগে হোটেল-রেস্তোরাঁ পুরোপুরি খোলার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেককেই খাবারের জন্য দূর-দূরান্তে যেতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি হচ্ছে তাদের। অল্পসংখ্যক হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও সেগুলোতে গ্রাহকের চাপ অনেক বেশি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে খাবার খেতে হচ্ছে। তাছাড়া কোথাও কোথাও বেশি দাম রাখার অভিযোগও রয়েছে।
আরও পড়ুন
ঈদ উপলক্ষে সরকারি নির্দেশনা ও ব্যবসায়িক স্বার্থে ঢাকা শহরের বড় বড় হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো কয়েক দিন ছুটি পালন করছে। অনেক হোটেল এক সপ্তাহের জন্য পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ভাসমান জনগোষ্ঠী, দিনমজুর, রিকশাচালক, গার্মেন্টস শ্রমিক এবং যারা বাইরের খাবারে নির্ভরশীল তাদের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। যারা নিয়মিত মেসে খান তাদেরও খাবারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারণ, ঈদের ছুটিতে সাধারণত বুয়ারা বাড়িতে চলে যান। এতে মেসে মিল বন্ধ থাকে।
বিজ্ঞাপন
রিকশাচালক সোহেল ঢাকা মেইলকে বলেন, ছুটির দিনে বাইরে খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় আমাদের জন্য খাওয়া-দাওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। দিনে কোথাও খেপ (ট্রিপ) নিলে সেখানে খেয়ে আসি। তাছাড়া কলা-রুটিই ভরসা।
যাত্রাবাড়ী এলাকার চা দোকানদার আব্দুর রহিম ঢাকা মেইলে বলেন, কী করবো, সব সময়ই ঈদের সময় হোটেল বন্ধ থাকে। জীবিকার আশায় এই কষ্ট মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ঈদ উপলক্ষে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোর জন্য পর্যাপ্ত পরিষেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি।
সামাজিক বিশ্লেষকরা বলেন, ঈদের সময় যেহেতু বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, সেক্ষেত্রে বিশেষত দরিদ্রদের জন্য খাবারের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা দরকার। স্থানীয় প্রশাসন, এনজিও এবং সমাজের বিভিন্ন অংশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে কেউ অনাহারে না থাকে।
এমআর/জেবি