রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

৭ জনের কবজি কেটেছেন আনোয়ার ও তার সহযোগীরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

৭ জনের কবজি কেটেছেন আনোয়ার ও তার সহযোগীরা
কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত সন্ত্রাসী ‘কবজি কাটা’ গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ারকে (৩৬) গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আনোয়ার ও তার গ্রুপের সদস্যরা এখন পর্যন্ত সেই এলাকায় সাতজনের কবজি কেটে তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে উল্লাস করেছেন৷ আনোয়ার গ্রুপ কবজি কাটার পর তা গরম পানিতে সিদ্ধ করত বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক তালুকদার।


বিজ্ঞাপন


র‌্যাব বলছে, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আনোয়ার সাতজনের কবজি কাটাসহ বহু মানুষকে কুপিয়ে আহত ও পঙ্গু করেছেন। র‍্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর আনোয়ার স্বীকার করেছেন, তিনজনের কবজি কেটেছেন। তবে র‍্যাবের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে তারা সাতজনের কবজি কেটেছেন।

আরও পড়ুন

মোহাম্মদপুরবাসীর আতঙ্ক ‘কব্জি আনোয়ার’

পুলিশের চোখে ‘পলাতক’ আনোয়ার কোপালেন দুজনকে

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, টার্গেট ব্যক্তির ওপর হামলা ও ছিনতাইয়ের সময়ে আনোয়ার ও তার লোকজন আশেপাশের রাস্তায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করতেন। এরপর তারা যানজট কমাতে সহযোগিতার নামে কৃত্রিম ব্লক সৃষ্টি করতেন। পরে আনোয়ার এসে টার্গেট ব্যক্তির ওপর হামলা করতেন। তিনি আসার আগে সামনে ও পেছনে একাধিক টিম থাকত। এছাড়া ভেঙে ফেলা হতো আশপাশের সিসি ক্যামেরা।  

এসময় তিনি দাবি করেন, গত ৫ আগস্টের পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে পাঁচ শতাধিক ছিনতাইকারী গ্রেফতার করেছেন তারা৷ খুব শিগগিরই মোহাম্মদপুরে অপরাধের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে।


বিজ্ঞাপন


Anwer2

সোমবার রাতে আনোয়ার ছাড়াও তার দুই সহযোগী মো. ইমন (২০) এবং মো. ফরিদ (২৭)। তাদের আদাবর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়- দেশীয় অস্ত্র সামুরাই একটি, ছুরি দুটি, গাঁজা আট কেজি, একটি প্রাইভেটকার ও একটি হাত ঘড়ি।

যেভাবে উত্থান কবজি-কাটা আনোয়ারের

র‍্যাব-২ এর অধিনায়ন অতিরিক্ত ডিআইজি জানান, আনোয়ার ২০০৫ সালে জীবিকার সন্ধানে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় তার বাবার কাছে চলে আসেন। ঢাকায় এসে বিশুদ্ধ খাবার পানি পরিবহন করতেন। প্রথম পর্যায়ে আনোয়ার অপরাধ জগতে ছিনতাই ও বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি শুরু করলেও ২০২৪ সালে মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেকে কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। কবজি কাটা ভিডিওটি টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

আরও পড়ুন

সেই ‘কব্জি কাটা’ আনোয়ার গ্রেফতার

মোহাম্মদপুর-আদাবরে কোনো গডফাদার-সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না: র‌্যাব-২ সিও

র‌্যাব জানায়, কবজি কাটা ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে ও বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে এলে ধারাবাহিক অভিযানের মুখে বাহিনীর অন্যতম সদস্য ভাগ্নে বিল্লালসহ আরও অনেকে গ্রেফতার হন। আনোয়ার নিজের আগের লেবাস পরিবর্তন করে আত্মগোপনে থেকে ‘কবজি কাটা’ গ্রুপের নামে দুর্ধর্ষ এক বাহিনী গড়ে তোলেন। মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা হাউজিং ও আদাবরের শ্যামলী হাউজিং, শেখেরটেক, নবোদয় হাউজিং এলাকায় হত্যা, অস্ত্র-গুলি, মাদক কেনাবেচা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে এই বাহিনী।

এমআইকে/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর