মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

জনগণের অর্থের গচ্চা, কাজে আসেনি পুশ বাটন সিগন্যাল

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

জনগণের অর্থের গচ্চা, কাজে আসেনি পুশ বাটন সিগন্যাল
ছবি: ঢাকা মেইল
  • একটি বাদে উত্তর সিটির সব সিগন্যাল অকেজো
  • পুশ বাটন সিগন্যাল পয়েন্টে নেই নজর
  • নবনিযুক্ত কর্মকর্তার ‘অ্যাকশন প্ল্যানের’ উদ্যোগ

বছর-পাঁচেক আগে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি ‘পুশ বাটন সিগন্যাল পদ্ধতি’ চালু করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বাটন চেপে ধরলেই লাল বাতি জ্বলে উঠবে, সড়ক পারাপার হবেন পথচারীরা৷ উন্নয়নের দোহাই দিয়ে নির্মিত নগরের সেই সিগন্যাল পয়েন্ট কয়েক বছর ধরেই অকেজো পড়ে আছে। মাঝে জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে দুই সিগন্যাল পয়েন্টের জন্য গচ্চা গেছে নয় লাখ ২০ হাজার টাকা।


বিজ্ঞাপন


২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর দুটি ট্রাফিক সিগন্যাল পয়েন্ট উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র আতিকুল ইসলাম। একটি গড়ে তোলা হয় রাজধানীর আসাদ এভিনিউতে, আরেকটি মহাখালীত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে।

সূত্রে জানা যায়, এই সিগন্যাল উদ্বোধনের এক সপ্তাহের মাথায় তা অকেজো হয়ে পড়ে৷ পরবর্তী সময়ে তা ঠিক করা হয়। তবে সেটা খুব বেশি দিন সচল থাকেনি। উদ্বোধনের পর বেশির ভাগ সময় সম্পূর্ণ অকেজোই পড়ে আছে সিগন্যাল পয়েন্ট দুটি।

Trafik3


বিজ্ঞাপন


নগরীর আসাদ এভিনিউতে গিয়ে দেখা যায়, মেয়র আতিকুল ইসলামের গড়ে তোলা সিগন্যাল পয়েন্টটি বেহাল দশায় পড়ে আছে। পথচারীরা পারাপারে হলেও সিগন্যাল পয়েন্টের সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এলোমেলো চলাচল করা গাড়ির মাঝেই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই দেখা যায়, একজন পথচারী সড়ক পারাপারের উদ্দেশ্যে সিগন্যাল পয়েন্টের বাটনে চাপ দেন। কয়েক বার চাপ দেওয়ার পরেও তা কোনো কাজ করেনি। পরে পথচারী হাতের ইশারায় গাড়ি থামিয়ে সড়ক পার হন।

ট্রাফিক সিগন্যাল পয়েন্টটির পাশেই দুই ঝুড়ি ফল নিয়ে বিক্রি করতে বসেছেন মো. শাহিন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা তো কয়েক বছর ধইরাই নষ্ট৷ অনেকে আইসা দেখি বাটনে চাপ দেয়, কিন্তু কাজ করে না।'

আরও পড়ুন

৩০ টাকার ব্রেকের ওপর তিন জীবন

এ সময় একজন পথচারী স্বপ্রণোদিত হয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন। নাইমুল হক নামের ওই পথচারী বলেন, 'সিটি করপোরেশনের মন চাইছে, এটা বানাইছে। এখন মন চায় না, দেখভাল করে না। এরপর উন্নয়নের নামে সিটি করপোরেশন কোনো কাজ করতে আসুক, আমরা প্রোটেস্ট করবো। উন্নয়নের নামে জনগণের টাকা নষ্ট করার অধিকার তাদের নাই।'

Trafik2

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নবনিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর), ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেল খন্দকার মাহবুব আলম ঢাকা মেইলকে জানান, তিনি গত সেপ্টেম্বরে নগর ভবনে নিযুক্ত হয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর উপদেষ্টা কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে।

আরও পড়ুন

১৫ লাখ আবাসিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ যাচ্ছে রাজধানীর অটোরিকশায়

এই কর্মকর্তা বলেন, 'আমাদের সব ট্রাফিক সিগন্যাল পয়েন্টই অকার্যকর। শুধু গুলশান-২ এর একটি সিগন্যাল পয়েন্টে লাইট জ্বলে।'

এ বিষয়ে একটি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ করতে কাজ চলমান বলে জানান এই নগর কর্মকর্তা।

Trafik4

এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা উত্তরের তৎকালীন মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটা করে এই পুশ বাটন ট্রাফিক সিগন্যালের উদ্বোধন করেছিলেন। এ পদ্ধতিতে সড়কের উভয় পাশে দুটি বাটন রাখা হয়। যা একবার চাপ দিলে সিগন্যালের লাল বাতিটি ৩০ সেকেন্ডের জন্য জ্বলে উঠবে। এসময় পথচারীরা রাস্তা পারাপার হবেন। বাটন একবার চাপ দিলে পরবর্তী ২২০ সেকেন্ডের মধ্যে আর বাটন চাপলেও লালবাতি জ্বলবে না। এই সময় শেষ হওয়ার পরে পুনরায় বাটন চাপলে আবারো ৩০ সেকেন্ডের জন্য লাল বাতি জ্বলবে।

আরও পড়ুন

ক্লাস ছেড়ে পার্কে-মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে শঙ্কা

বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ধরনের সিগন্যাল পদ্ধতি চলমান থাকলেও বাংলাদেশে এটিই ছিল প্রথম। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নগরের ৪৮টি স্থানে এ ধরনের সিগন্যাল পদ্ধতি চালু করার কথাও ছিল। তবে প্রথম দুটি সিগন্যালে হোচট খাওয়ার পর আর সামনে এগোয়নি সিটি করপোরেশন।

কারই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর