সড়কে পণ্যবাহী গাড়ি টার্গেট করত চক্রটি। এরপর সংকেত দিয়ে গাড়ি থামিয়ে হেলপার ও চালককে নামিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলত। পরে সেই গাড়িসহ পণ্য ডাকাতি করত চক্রটি।
দীর্ঘদিন ধরে এভাবে সাভার ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় রাতের বেলা ডাকাতি করে আসছিল চক্রটি। অবশেষে এর ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। তাদের গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- আসলামুল হক আসলাম ওরফে বেলাল (৩৭), রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), মেহেদী শেখ হিরা (৩৩), জমির খান (৩৬) ও মো. জহিরুল ইসলাম চকিদার (৫০), জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো. মিরন ওরফে সুজন (৫০), মো. মেহেদী হাসান রাজীব (৩০), আব্দুল মতিন (৪২), বাদল মুন্সী (৪৫) ও সাগর ইসলাম (২৪)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি গাড়ি, পুলিশের ওয়্যারলেস, জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির কনফারেন্স রুমে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি ডিমের গাড়ি ডাকাতি ও একইভাবে সাভারের চান্দিনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, মহাসড়কে ডিবি পুলিশের পোশাক পরে লেজার লাইটের সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে ডাকাতি করে আসছিল তারা। এ চক্রটি ধারাবাহিকভাবে মূল্যবান যেকোনো পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই সংকেত দিত।
হারুন বলেন, আমরা বলতে চাই দেশের কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা করবেন। কারণ মামলা হলে তখন এসব চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করতে পারব। গ্রেফতার হওয়া ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ থেকে ১২টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।
হারুন অর রশীদ বলেন, সাভারের চান্দিনায় এক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ডাকাতির শিকার হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সেসব ঘটনায় এই দুই ডাকাত দলের সদস্যরা জড়িত।
ডিবি বলছে, তারা প্রতিদিনই মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি ডাকাতি করত। তারা প্রথমে পুলিশে সেজে গাড়িকে থামার সংকেত দিত। এরপর পুলিশ পরিচয়ে গাড়ির কাগজ ও মালামাল সম্পর্কে জানতে চাইত। এসময়ের মধ্যে ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা চালক ও তার সহকারীর হাত-পা বেঁধে নিজেদের অন্য গাড়িতে তুলি নিত। পরে তারা পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পণ্য বিক্রি করে সটকে পড়ত।
এমআইকে/জেবি