অমর একুশে গ্রন্থমেলার পঞ্চম দিনে ৭০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও ৮টি গল্প ও ৬টি উপন্যাসসহ বিভিন্ন বিষয়ের বই রয়েছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। বেলা তিনটা থেকে শুরু হওয়া বইমেলা রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।
বিজ্ঞাপন
কবিতা ছাড়াও আজ প্রকাশিত অন্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ৮টি গল্প, ৬টি উপন্যাস, একটি প্রবন্ধ, তিনটি গবেষণা, একটি করে ছড়া ও শিশুসাহিত্য, তিনটি জীবনী। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুটি, ভ্রমণ একটি, ইতিহাস দুটি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক একটি এবং অন্যান্য পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সার্ধশত জন্মবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি: মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাসুদ রহমান। আলোচনায় অংশ নেন ইসরাইল খান এবং তপন বাগচী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাইফুল আলম।
প্রাবন্ধিক বলেন, মানোত্তীর্ণ সাহিত্য সৃষ্টির প্রতিভা ছিল মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরীর। মাত্র ষাট বছরের জীবনে তাঁর যে সাধনা ও কীর্তি, তা তাঁকে বাঙালির নবজাগরণের ইতিহাসে স্মরণীয় জনের আসন দিয়েছে। একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সাংবাদিক-সম্পাদক, সংগঠক ও রাজনীতিক হিসেবে তিনি বরেণ্য। তার জীবনবৃত্তের পুরো তথ্য চয়ন ও বিশ্লেষণ করলে শুধু মুসলিম সম্প্রদায় বা পূর্ববাংলার নয়, হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে তাকে একজন যথার্থ রেনেসাঁ-অনুধ্যায়ী পুরুষ ও প্রকৃত বুদ্ধিজীবী হিসেবে শনাক্ত করা সম্ভব।
বিজ্ঞাপন
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরীর বড়ো পরিচয় হলো সাময়িকপত্র সম্পাদনা। তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার অধিকারী। তৎকালীন সময়ে শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। অসাম্প্রদায়িক
চেতনা ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন রওশন আলী চৌধুরী সাহিত্যচর্চায় মানুষকে উৎসাহী করে তোলার জন্য আজীবন পরিশ্রম করেছেন। আমাদের সাহিত্যের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরী একাধারে একজন লেখক, সংগঠক, রাজনীতিবিদ এবং সম্পাদক ছিলেন। তিনি নিজে যেমন লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, তেমনি লেখক-সাহিত্যিকদের একত্রিত করেছেন, সংঘবদ্ধ করেছেন। তাঁর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে অবগত করার দায়িত্ব আমাদের যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি নাসির আহমেদ, কবি ইসলাম রফিক, শিশুসাহিত্যিক চন্দনকৃষ্ণ পাল এবং লোকসাহিত্য গবেষক সৈয়দা আঁখি হক।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ, সরকার মাসুদ এবং মাসুদ পথিক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী, সাফিয়া খন্দকার রেখা এবং শামস মিঠু। দলগত আবৃত্তি পরিবেশন করেন ফয়জুল আলম পাপ্পুর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন’-এর শিল্পীরা।
এছাড়া ছিল কবিরুল ইসলাম রতনের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যালোক’ এবং জুয়েল কুমার সরকারের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্য নিকেতন’-এর নৃত্য পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, ইয়াসমীন মুশতারী, খায়রুল আনাম শাকিল, সুমন মজুমদার, লীনা তাপসী খান এবং সায়ন্ত মিশকাত জামি। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন দেবাশীষ দাস (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কী-বোর্ড), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি) এবং ফিরোজ খান (সেতার)।
এমএইচ/এমআর

