শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘিরে দিনভর তুলকালাম

মোস্তফা ইমরুল কায়েস
প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘিরে দিনভর তুলকালাম
  • তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ পুলিশ 
  • ওসি অপারেশনের ওয়ারলেস নিখোঁজ
  • জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালিকের ছেলে আটক

রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় আসমা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় দিনভর তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক ছিল যে, উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। পরে বাধ্য হয়ে লাইন থেকে বাড়তি ফোর্স আনা হয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি শান্ত করা যাচ্ছিল না। শেষে টিয়ারশেল ও শর্ট রাউন্ডের গুলিও ছুঁড়তে হয়েছে পুলিশ। ফলে টানা কয়েক ঘণ্টা পুলিশ ও উত্তেজিত জনতার মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন


এর আগে পুলিশের এক ওসিসহ পাঁচজনের ওপর হামলা চালিয়ে ওই বাসায় আগুন দেয় উত্তেজিত জনতা। এতে পুড়ে যায় বাসার নিচে থাকা তিনটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল। এছাড়াও আগুনের সময় তড়িঘড়ি করে নামতে গিয়ে এক নারী ও শিশু আহত হয়েছে। 

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনশ্রীর ডি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ডি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ৩২ নম্বরের ছয় তলা বাসা (হোসেন ম্যানশন) থেকে নিহত গৃহকর্মী আসমার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায় পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

আরও পড়ুন

পুলিশ কি পারবে আতশবাজি পটকা ফানুস বন্ধ করতে?  

বাসার লোকজন জানিয়েছেন, নিহত আসমা ওই বাসার মালিক দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে তুবার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তুবা তার স্বামী মইনুল ইসলামের সাথে মিরপুর এলাকায় থাকেন। তুবার স্বামী মইনুল ২৭ বিসিএস পাস করে প্লানিং কমিশনের পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। দুই মাস আগে তুবার বাসায় কাজ করতে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন আসমা। গত তিন দিন থেকে আসমা তার গৃহকর্ত্রী তুবার সাথেই বাসাটিতে ছিলেন। আসমার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। বাসার মালিক দেলোয়ার হোসেন একজন অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস কর্মকর্তা। তিনি কাস্টমসের ইন্সপেক্টর ছিলেন। বর্তমান একটি হাউজিং কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে।

BB2

ভবনটির পাঁচতলার ভাড়াটিয়া সাবিনা ইয়াসমিন ঢাকা মেইলকে বলেন, রোববার সকালে আসমার মৃতদেহ বাসার সামনে পড়ে থাকতে দেখেন বাসাটির দারোয়ানসহ এলাকাবাসী। পরে দারোয়ার কাসেম বাসার মালিক দেলোয়ার ও তার মেয়ে তুবাকে গিয়ে খবর দেন। তখন তারা ঘুমিয়ে ছিলেন। এরপর তারা নিচে নেমে আসেন। এরই মধ্যে উত্তেজিত জনতার ভীড় জমে সেখানে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদের ওপর হামলা হয়।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা জানা গেছে, রোববার সকাল সাড়ে সাতটায় আসমার মরদেহ বাসাটির সামনে পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। কিন্তু তারা গিয়ে দেখতে পান উত্তেজিত জনতা বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরপর তারা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। পুলিশের পাঁচ সদস্যের ওপর হামলার পরই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো বনশ্রী এলাকা। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরই মাঝে উত্তেজিত জনতা ওই বাসার নিচতলায় আগুন দিলে গ্যারেজে থাকা তিনটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। এছাড়াও ভবনটির দ্বিতীয় তলায় থাকা এক নারী ও শিশু আহত হয়। পরে ভবনটির সদস্যদের উদ্ধার করে পুলিশ।

এঘটনায় বাসার মালিক দেলোয়ারের ছেলে আসিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রামপুরা থানার একটি সূত্র। যদিও বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না। পুলিশের হাতে আটক আসিফ একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। পরিবার নিয়ে ওই বাসাতেই থাকেন তিনি।

এ বিষয়ে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান ঢাকা মেইলকে বলেন, তখন পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিছু টিয়ারশেল ও শর্ট রাউন্ড গুলি ছুড়েছি। তবে এই মুহূর্তে কত রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে তা বলতে পারছি না।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি ৷ তবে প্রয়োজন হলে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নিহতের পরিবার গ্রাম থেকে ঢাকায় আসছে। তারা এখনো অভিযোগ করেনি।

আরও পড়ুন

থার্টিফার্স্ট নাইটে রাজধানীতে বিজিবির ডগ স্কোয়াড 

এ ঘটনায় বাসার মালিক ও সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, আসমার সকালে ছাদে কাপড় ধোয়ার জন্য গিয়েছিলেন। এরপরই তিনি ছাদ থেকে পড়ে যান। তারা ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে দারোয়ান মারফতে বিষয়টি জেনেছেন। তার দাবি, আসমা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এছাড়াও আসমার পারিবারিক সমস্যার কারণে সে হতাশায় ভুগছিল। তবে তার এমন বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ।

তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ পুলিশ!

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, খবর পেয়ে সাড়ে সাতটার দিকে রামপুরা থানা পুলিশের ওসিসহ পাঁচজন সেখানে যান। তারা গিয়ে দেখতে পান উত্তেজিত জনতা বাসার গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। এ দৃশ্য দেখে পুলিশ সদস্যরা বাসাটির নিচে থাকা গ্যারেজে ঢুকে পড়েন। এসময় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। জীবন রক্ষায় তারা গ্যারেজটির ভেতরে থাকা একটি ঘরে ঢুকলে অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। পরে পুলিশের বাড়তি ফোর্স নিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

BB3

সেই পাঁচজনের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য বিকেলে ঢাকা মেইলকে নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আমরা বেঁচে আছি এটাই বড় পাওয়া। সেই সময় গ্যারেজের ছোট ঘরে ঢোকামাত্র তারা দরজা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় বাইরে লোকজন আমাদের মারবে বলে স্লোগান দিচ্ছিল। উত্তেজিত জনতার মধ্যে অধিকাংশ নারী ও উঠতি যুবক ছিল। এর মধ্যে পাঁচ থেকে সাতজন উঠতি যুবক তাদের লিড দিয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই হামলা ও বাসার গ্যারেজে আগুন দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পুলিশ সদস্যরা আগুন দেখতে পেয়ে বাসাটির সদস্যদের ওপরে পাঠিয়ে দেয়। পরে নিচের আগুন আমরা নিজেরাই রাস্তার বালু ও মাটি ছিটিয়ে নিভিয়েছি।

ওসি অপারেশনের ওয়ারলেস নিখোঁজ!

ডিউটিরত পুলিশের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, বনশ্রীর ঘটনার সময় পুলিশের পাঁচ সদস্য অবরুদ্ধ করে রেখেছিল উত্তেজিত জনতা। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন রামপুরা থানার ওসি (অপস) মোকলেসুর রহমান। এসময় তার হাতে থাকা ওয়ারলেসটি ছিনিয়ে নেয় উত্তেজিত জনতার একজন। এখন পর্যন্ত সেটি পাওয়া যায়নি। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলামের দাবি, ওয়ারলেস নয়-একটি মোবাইল ফোন হারিয়েছে। সেটি এখনো পাওয়া যায়নি। তবে যারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদেরকে শনাক্ত করা হবে। 

জীবন বাঁচাতে জরুরি সেবা ৯৯৯ কল

বাসাটির দ্বিতীয় তলায় থাকা ভাড়াটিয়া আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার তিন মাসের মেয়ে হুমায়রা হাবিবা ও বাচ্চার মা হাতে আঘাত পেয়েছেন। ভবনটির গ্যারেজে উত্তেজিত জনতা আগুন দেওয়ার সময় তাদের ঘরে ধোঁয়া ঢুকতে শুরু করে। এসময় তারা জীবন রক্ষায় সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করেও পারেনি। পরে তারা ছাদে ওঠে। এরপর সেই বাসার ছাদ ব্যবহার করে অন্য বাসার ছাদে গিয়ে রক্ষা পান। তার অভিযোগ, পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।

তিনি এটাও জানান, গ্যারেজের নিচ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখতে পেয়ে  সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করেন তিনি। এরপর সেখানে তিনি পুলিশের সহায়তা চান। তবে আজ তিনি ওই বাসাটিতে থাকছেন না। স্ত্রী ও সন্তানকে গ্রামের বাড়িতে পাঠাচ্ছেন।

BB4

ভাড়াটিয়া রাজ্জাকের সাথে যখন কথা হচ্ছিল পুরো বাসা অন্ধকার। বাসাটিতে উত্তেজিত জনতা আগুন দেওয়ার কারণে ইলেকট্রিসিটিও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুতের কর্মীরা সেই এলাকায় নতুন করে বিদ্যুত সংযোগের কাজ করছিল।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা সকাল সাড়ে সাতটার দিকে খবর পান। এরপর সেখানে ওসিসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য ছুটে যান। কিন্তু ততক্ষণে উত্তেজিত ভাঙচুর চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্ত তারা তার কোনো কথাই শোনেনি। তখনও পুলিশ ধারণা করতে পারেনি পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। এরপরই কিছু বুঝে ওঠার আগেই উল্টো তারা হামলার শিকার হন। এলাকাবাসী ও পাশের বস্তি থেকে আসা শত শত নারী পুরুষ তাদের ওপর এ হামলা চালায়। উত্তেজিত জনতার হামলায় রামপুরা থানার ওসি মশিউর রহমানসহ পাঁচজন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওসির মাথায় পাঁচটি সেলাই পড়েছে। এরই মাঝে উত্তেজিত জনতা ওই বাসার নিচতলায় আগুন দিলে গ্যারেজে থাকা তিনটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। এছাড়াও ভবনটিতে লাগা আগুনে দ্বিতীয় তলীয় থাকা এক নারী ও শিশু আহত হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ওই বাসায় গৃহকর্মী আসমাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ফলে বাসাটির সামনে লোক সমাগম মিনিটে মিনিটে বাড়তে থাকে। সেই সাথে বাড়তে থাকে উত্তেজনাও। গুজবের সূত্র ধরে সেখানে শত শত কাজের বুয়া জড়ো হতে থাকেন।

আরও পড়ুন

ছিনতাইয়ের গাড়ি দিয়ে ৭ মাস ধরে ছিনতাই করছিলেন তারা! 

বনশ্রী ডি ব্লকের বাসিন্দারা জানান, ঘটনা সকাল সাড়ে সাতটায় হলেও ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত টানা উত্তেজনা চলে। সেই বাসার সামনে থেকে প্রধান সড়ক পর্যন্ত জনতার ঢল নামে এবং তাদের সামাল দিতে পুলিশের বাড়তি সদস্য আনা হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এছাড়াও শর্ট রাউন্ডের গুলিও করতে দেখেছেন অনেকে। তবে বিষয়টি স্বীকার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছে, উত্তেজিত জনতাকে সামাল দেওয়াটা তাদের জন্য কষ্টকর হতো না। কিন্তু ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি ঘোটালে করতে শুরু করে দুই গার্মেন্টেস নেত্রী। তারা উত্তেজিত জনতাকে আসমাকে হত্যা করা হয়েছে ও তারা সেটির বিচার করতে এসেছেন বলে বারবার উস্কে দিতে থাকেন। এ ঘটনার পর সেই দুই নেত্রীর নাম ও তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি উঠতি কয়েকজন যুবক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মতিঝিল বিভাগের পুলিশ।

ক্রাইম সিন ও পিবিআই ঘটনাস্থলে

এ ঘটনার পরপরই সেখানে গিয়ে হাজির হন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সদস্যরা। তারা সেখানে গিয়েই ভবনটির পাশে থাকা কয়েকটি ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। দুপুরের দিকে পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের এসপি মিজানুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা বলব না আসমাকে হত্যা করা হয়েছে। এটি তদন্তের বিষয়। তবে এ ঘটনায় সিসি ফুটেজ পাওয়া গেছে। পিবিআই চলে যাওয়ার পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে হাজির হয় সিআইডির ক্রাইম সিন বিভাগের সদস্যরা। তারা গিয়েই বাসাটির গেট ফিতা দিয়ে কর্ডন করে দেন। এরপর আলামত সংগ্রহ করেন।

এমআইকে/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর