রাজধানী ঢাকায় যানজট পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এই নগরীর বাসিন্দাদের দুই ঘণ্টার যাত্রাপথে গড়ে ৪৬ মিনিট নষ্ট হয় যানজটের কবলে পড়ে। আর বছরে তাদের গড়ে ২৭৬ ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে যানজটে। এতে বছরের প্রায় ১১ দিন যানজটের মধ্যেই কাটাতে হয় এই মেগা সিটির বাসিন্দাদের।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘রিডিউসিং পলিউশন ফর গ্রিন সিটি’ শীর্ষক এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: যে কারণে যানজট কমছে না সড়কে
ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকার ৫০০ খানার ওপর জরিপ করে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেলসহ দেশি বিদেশি পরিবেশবিদরা উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণায় বলা হয়, বায়ুদূষণ জনিত রোগের কারণে প্রতিবছর ঢাকাবাসীর জনপ্রতি ব্যয় হয় চার হাজার টাকার বেশি।
বিজ্ঞাপন
সংস্থাটির জরিপে উঠে এসেছে, গত ২-৩ বছরে রাজধানীতে বায়ু দূষণের পরিমাণ বেড়েছে। ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে প্লাস্টিক দূষণও। ৪৩ শতাংশ পরিবার মনে করে সরাসরি রাস্তায় আবর্জনা ফেলার কারণেই পরিবেশ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তার ওপর যোগ হয়েছে গাড়ি, কারখানার ধোঁয়া ও নির্মাণ কাজের ধুলাবালি।
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। সিপিডির সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে স্থায়ী চিমনি ইটভাটা বন্ধ করতে একটি নীতিমালা করা উচিত। যেন পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের সমস্ত স্থায়ী চিমনি ইট ভাটাগুলো বন্ধ করা যায়। একই সঙ্গে ইট উৎপাদন কম দূষণকারী প্রক্রিয়ায় স্থানান্তরিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন উন্নত জিগজ্যাগ ভাটা, হাইব্রিড হফম্যান ভাটা এবং উল্লম্ব খাদ ইটভাটা। আর বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা-ভিত্তিক পাওয়ারপ্ল্যান্টগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার সুপারিশও করেন তারা।
আরও পড়ুন: ধীরগতির রিকশাই যানজটের প্রধান কারণ
এছাড়া পরিবেশ সারচার্জ বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয় সিপিডির গবেষকরা। গবেষকরা জানান, অর্থ আইন পরিবেশ দূষণকারী শিল্প দ্বারা উৎপাদিত পণ্যের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ নির্ধারণ উচিত। যা পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যয় হবে। প্লাস্টিক দূষণের জন্য মূলনীতি সুপারিশ পলিথিন ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার পাশাপাশি প্লাস্টিক পণ্যের রিসাইক্লিংয়ের ওপরে জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, আইন করে এসব দূষণ বন্ধ করা যাবে না। এর জন্য দরকার জনসচেতনতা। বিদ্যমান যেসব আইন আছে, তা আংশিক প্রয়োগ করলেও বাংলাদেশ ‘সোনার বাংলা’ হয়ে উঠবে।
জেবি