সুস্থ থাকতে পানির বিকল্প নেই। দৈনিক পরিমিত পানি পানের মাধ্যমে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব। তবে সেই পরিমাণ কতটুকু? ডাক্তারসহ বেশিরভাগ মানুষই জানেন সুস্থ থাকতে একজন ব্যক্তির প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার বা ৮ গ্লাস পানি পানের প্রয়োজন। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন তথ্য। এই সমীক্ষা অনুযায়ী ২ লিটার পানি শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় তবে দেহ সতেজ রাখতে এত পানি পানের প্রয়োজন নেই।
সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কটল্যান্ডের আবেরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক পানি পানের ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং মানুষের জনসংখ্যার কারণে কীভাবে মানুষের ব্যবহারের পানির প্রয়োজনীয়তা আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে তা অনুসন্ধানের জন্য গবেষণাটি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
গবেষক দল খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন একজন ব্যক্তির দিনে কতটুকু পানি পান করা প্রয়োজন? ২৬টি দেশের ৫ হাজার ৬০৪ জনের ওপর গবেষণা চালানো হয়। এসব ব্যক্তির বয়স ছিল ৮-৯৬ বছর।
গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের ১০০ মিলিলিটার পানি দিয়েছিলেন যা পাঁচ শতাংশ ‘ডবল লেবেলযুক্ত পানি’ দিয়ে সমৃদ্ধ করা ছিল। অর্থাৎ, এই পানিতে হাইড্রোজেন মোলেকিউলসের বদলে ডিউটারিয়ামের স্ট্যাবল ইসোটেপ দেওয়া হয়েছিল। এটি প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে পাওয়া যায় এবং এর কোনো ক্ষতিকর দিক নেই।
বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, একজন ব্যক্তির জন্য দিনে ১ দশমিক ৫ লিটার থেকে ১ দশমিক ৮ লিটার পানিই যথেষ্ঠ। যা দুই লিটারের ধারণা থেকে কম।
সাধারণত যেসব মানুষের দেহে পানির চাহিদা বেশি তাদের পানিও বেশি পান করতে হয়। তাই, ডিউটারিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেখা হয়েছে কীভাবে দ্রুত শরীরে পানির চাহিদা তৈরি হচ্ছে।
>> আরও পড়ুন: পানি বিশুদ্ধ করার নানা উপায়
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০-৩৫ বছর বয়সী পুরুষের দেহে পানির দৈনিক চাহিদার পরিমাণ ৪ দশমিক ২ লিটার। অন্যদিকে ২০-৪০ বছর বয়সী নারীদের পানির চাহিদার পরিমাণ ৩ দশমিক ৩ লিটার। ২০-৩০ বছর বয়সী পুরুষ এবং ২০-৫৫ বছর বয়সী নারীদের পানির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪০ বছরের পর এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের পর পানির চাহিদা হ্রাস পায়।
এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, উষ্ণ ও আর্দ্র স্থানে বসবাসকারী মানুষ, অ্যাথলেট এবং গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের বেশি পানি প্রয়োজন। এসব ব্যক্তিদের দেহে পানির চাহিদা অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে।
>> আরও পড়ুন: কিডনি রোগী দিনে কতটুকু পানি পান করবেন?
গবেষকরা উল্লেখ করেন, সমীক্ষাটি প্রমাণ করে যে সবার জন্য একই পরিমাণ পানি পানের বিষয়টি ঠিক নয়। সাধারণত যে ৮ গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হয় সেটিও পুরোপুরি ঠিক নয়।
এনএম