শীত এলে বিছানার সঙ্গে অলিখিত প্রেম জমে যায়। কাঁথা-কম্ফোর্টার ছেড়ে বের হতে যেন কিছুতেই মন চায় না। প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরেও বের হতে ইচ্ছে করে না। ঘরের উষ্ণ পরিবেশই তখন স্বস্তি দেয়। তার সঙ্গে জুটি বাঁধে হরেকরকম পিঠা আর ভাজাপোড়া। ফলাফল, ওজন মাপার যন্ত্র জানাচ্ছে আগের চেয়ে কয়েক কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলেছেন।
শীতকালকে তাই অনেকেই ওজন বাড়ার মৌসুম বলে থাকেন। শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ কমে যাওয়া আর মুখরোচক সব খাবার খাওয়ার কারণেই এসময় স্থূলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যা বাড়িয়ে দেয় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি সব রোগের আশঙ্কাও।
বিজ্ঞাপন

শীতে ওজন বাড়ে কেন?
শীতকালে ওজন বাড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো-
- বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়া
- দৈনন্দিন হাঁটাচলা ও শারীরিক পরিশ্রম হ্রাস
- ফ্যাটযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া
- পর্যাপ্ত পানি না খাওয়ার প্রবণতা
- ঘুমের রুটিন এলোমেলো হয়ে যাওয়া
এসব অভ্যাস একসঙ্গে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমাতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কীভাবে?
১. ঘরেই নিয়মিত ব্যায়াম
জিমে যাওয়া সম্ভব না হলেও ঘরেই প্রতিদিন অন্তত ২০–৩০ মিনিট ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম করুন। স্কোয়াট, পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্কের মতো ব্যায়ামগুলো ওজন কমাতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। ব্যায়াম করলে শরীর সক্রিয় থাকে। ক্যালোরি পোড়ে।
২. খাবারে খান একটু বুঝেশুনে
শীতে বেশি খিদে পাওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু কী খাচ্ছেন সেটাই মূল বিষয়। ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মিষ্টি কম খান। খাদ্যতালিকায় রাখুন শীতের সবজি, ডাল ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। ছোট প্লেটে খাবার নিয়ে খান। এতে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। রাতের হালকা খাবার খান।

৩. পর্যাপ্ত পানি পান
শীতে পিপাসা কম লাগলেও শরীরের পানির চাহিদা কমে না। পর্যাপ্ত পানি না খেলে শরীরের মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়। তখন ওজন কমানো কঠিন হয়। তাই দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস বজায় রাখুন।
৪. ঘুমের রুটিন ঠিক রাখুন
অনিয়মিত ঘুম হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা ক্ষুধা বাড়ায়। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান। রোজ ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। রাত জেগে খাবার খাওয়ার অভ্যাস এড়িয়ে চলুন।

৫. ছোট কাজেও শরীর নড়াচড়া করান
ঘরে থাকলেও শুয়ে বসে থাকবেন। ফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটুন। টিভি দেখার ফাঁকে হালকা স্ট্রেচিং করুন। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। এতে শরীর সক্রিয় থাকবে।
শীত মানেই অলসতা নয়। একটু সচেতন থাকলে সুস্থ ও সক্রিয় থাকা সম্ভব।
এনএম

