একসময় মনে করা হতো উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা কেবল বয়স্কদেরই হয়। এই ধারণা এখন আর সত্য নয়। অনেক কম বয়সীরাও এই সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। কম ঘুম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপানের অভ্যাস ইত্যাদি কারণে রক্তচাপ ওঠা-নামা করছে।
যাদের হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের সবসময় হাতের কাছে ওষুধ রাখতে হয়। মাঝেমধ্যে রক্তচাপ মেপে নেওয়াও জরুরি। কিন্তু পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে হঠাৎ করেই আপনার রক্তচাপ বেড়েছে এবং হাতের কাছে ওষুধ নেই তখন কী করবেন?
বিজ্ঞাপন

যেসব লক্ষণে বুঝবেন রক্তচাপ বেড়েছে
রক্তচাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া ভালো লক্ষণ নয়। এ কারণে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। কিছু লক্ষণে বুঝবেন রক্তচাপ বেড়েছে-
- বুক ধড়ফড় করা
- মাথা ঘোরা
- বমি ভাব
- চোখের সামনে সব অন্ধকার দেখা
- হাত-পায়ের পেশিতে টান ধরার মতো লক্ষণগুলো দেখা গেলে সতর্ক হোন
সাময়িকভাবে রক্তচাপ কমানোর কিছু উপায় আছে। চলুন এগুলো জেনে নিই-
১. ডিপ ব্রিদিং:
কম সময়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্বাসের ব্যায়ামই আদর্শ। শান্ত হয়ে বসে গভীরভাবে শ্বাস নিন। কিছুক্ষণ শ্বাস ধরে রেখে তা ধীরে ধীরে ছাড়ুন। গোটা প্রক্রিয়াটি করতে হবে ১০-২০ সেকেন্ড ধরে। পরপর ৩ সেট এমনটা করলেই রক্তচাপ বশে থাকবে। শরীরের প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে তোলে এই পদ্ধতি। রক্তচাপ কমার পাশাপাশি অত্যধিক উত্তেজনা, অস্থিরতাও কমায় এটি। নিয়ন্ত্রিত হয় হৃৎস্পন্দনের হারও।
২. ঠান্ডা পানির ঝাপটা:
রক্তচাপ কমাতে একটি উপকারি পদ্ধতি এটি। মুখে, ঘাড়ে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। এতে রক্তজালিকাগুলোর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কাও কমে। চিকিৎসকদের মতে, শরীরে অস্বস্তি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি মাথা, ঘাড়, মুখ ও পায়ের পাতা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধোয়া যায় তাহলে বিপদ অনেকটাই কমবে।

৩. লেবু-পানি:
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। চিনি ও লবণ না মিশিয়ে যদি লেবু-পানি পান করেন তাহলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এক গ্লাস পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারলেই শরীরে পানি ও খনিজের ঘাটতি অনেকটা মিটে যাবে। লেবুর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট শরীরে শক্তির জোগান দেবে।
আরও পড়ুন-
৪. ধীরে ধীরে পানি পান করুন:
এক গ্লাস পানি ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করলেও উপকার মিলবে। বুক ধড়ফড়, দরদর করে ঘাম হতে থাকলে, সেসঙ্গে মাথা ঘোরার লক্ষণ দেখা দিলে, স্থির হয়ে বসুন। ধীর গতিতে পানি পান করুন। এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হবে। তবে ভুলেও কোল্ড ড্রিংকস বা সোডা খাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে।

৫. তুলসীপাতা ও রসুন:
রসুনে আছে অ্যালিসিন নামে একটি যৌগ, যা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। তুলসীপাতার অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া তুলসীর প্রদাহনাশক গুণও রয়েছে। কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খেলে বা পানিতে ভিজিয়ে খেলে শরীরের প্রদাহ খুব তাড়াতাড়ি কমবে।
এনএম


