কান্না খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। দুঃখ পেলে মানুষ কাঁদে। কষ্ট, বেদনা প্রকাশের অন্যতম অনুভূতি কান্না। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা ছোটোখাটো বিষয়েও চোখের জলে বুক ভাসান। এই অভ্যাস কি ভালো না খারাপ? এতে কি চোখের বা মনের ক্ষতি হচ্ছে? নাকি উপকার হচ্ছে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোখের জন্য কান্না অপরিহার্য। জেনে অবাক হবেন, অশ্রু চোখের স্বাস্থ্যের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের প্রচুর কান্নার অভ্যাস আছে তাদের চোখের সংক্রমণের ঝুঁকি খুব কম থাকে।
বিজ্ঞাপন

বেশি কাঁদা ভালো নাকি খারাপ:
১. ব্যাকটেরিওলাইটিক এনজাইম:
বিজ্ঞান বিষয়ক চিকিৎসা সংক্রান্ত বই এবং নিবন্ধ অধ্যয়নকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স ডাইরেক্টের মতে, লাইসোজাইম হলো একটি ব্যাকটেরিওলাইটিক এনজাইম যা আমাদের শরীরের লালা, অশ্রু এবং শ্লেষ্মায় পাওয়া যায়। এটি ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীর ভেঙে ধ্বংস করে, ফলে আমাদের শরীর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
বিজ্ঞাপন
২. চোখের পানি চোখের জন্য ভালো:
যারা খুব বেশি কাঁদেন তাদের চোখের সংক্রমণ খুব কমই দেখা যায়। কান্নার কারণে চোখ থেকে লাইসোজাইম নামক একটি উপাদান নিঃসৃত হয়, যা চোখের জন্য স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। অশ্রু চোখকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। চোখের পানি চোখকে কেবল ব্যাকটেরিয়া ও অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে না বরং চোখে প্রবেশ করা সূক্ষ্ম ধুলোও ধুয়ে ফেলে। এক্ষেত্রে, জ্বালা ও সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

৩. চোখে শুষ্কতা:
অশ্রু কেবল চোখকে সুস্থ রাখে না, এটি আবেগগত ও মানসিক স্বস্তিও দেয়। অনেক ডাক্তার বলেন যে অতিরিক্ত কান্না চোখে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা চোখের স্বাভাবিক অশ্রু ভারসাম্যের জন্যও সমস্যা তৈরি করতে পারে। ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়।
আরও পড়ুন-
৪. দূষণের মতো সমস্যা:
অশ্রুর তিনটি ধরন রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বেসাল অশ্রু, রিফ্লেক্স অশ্রু এবং আবেগগত অশ্রু। চোখকে তৈলাক্ত ও সুরক্ষিত রাখার জন্য চোখে ক্রমাগত বেসাল টিয়ার তৈরি হতে থাকে। এটি একটি পাতলা স্তর তৈরি করে যা চোখকে বাতাস, ধুলো এবং দূষণের মতো সমস্যা থেকে রক্ষা করে।

কান্নার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক:
বর্তমানে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মন ভালো রাখতে কান্নারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যারা মন খুলে কাঁদেন তারা বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের মতো মানসিক সমস্যা থেকে দ্রুত সেরে উঠতে পারেন।
একটি গবেষণা অনুযায়ী, যারা নিজ আবেগ দমন করেন, তাদের উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক চাপ এবং অন্যান্য মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অন্যদিকে, যারা মাঝে মাঝে কাঁদেন তারা নিজের আবেগকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হন এবং মানসিকভাবে আরও ভারসাম্যপূর্ণ থাকেন।
এনএম

