আমাদের সমাজে নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে নানা ট্যাবু বিদ্যমান। আর তাই বেশিরভাগ নারীই নিজের শারীরিক সমস্যাগুলো নিয়ে মুখ খুলতে লজ্জা পান। জরুরি বিষয়গুলো এড়িয়ে চলেন।
গরমে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি ইত্যাদি লেগেই থাকে। কিন্তু নারীদের আরও বেশি সমস্যা পোহাতে হয়। এসময় অনেক নারীই ভোগেন ইস্ট সংক্রমণে।
বিজ্ঞাপন

ইস্ট সংক্রমণ কী?
নারীদের একটি গোপন সমস্যা এটি। যোনি এলাকায় ইস্ট ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া থাকে। কোনো কারণে এই ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হলে এবং ইস্টের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকলে ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণ দেখা দেয়। যদিও এটিই সংক্রমণের একমাত্র কারণ নয়।
ইস্ট সংক্রমণের কারণ
বিভিন্ন কারণে একজন নারী ইস্ট সংক্রমণে ভুগতে পারেন। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের মতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে কিংবা ডায়াবেটিস থাকলে ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। শুধু তাই নয়, যোনি এলাকার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঠিকমতো বজায় না রাখলেও এই সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।

অনেকসময় জন্মনিরোধক পিল খেলে বা গর্ভাবস্থায় হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেও ইস্ট সংক্রমণের শিকার হতে পারেন।
আরও পড়ুন- পিরিয়ডের আগে স্তনে ব্যথা, কমাতে করণীয়
ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণের লক্ষণ
ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হলে যোনি এলাকায় অস্বাভাবিক চুলকানি হয়। প্রস্রাবের সময় জ্বালা ভাব, লালচে ভাব, মিলনের সময় ব্যথা— এগুলোও ইস্ট সংক্রমণের লক্ষণ। ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হলে গোপনাঙ্গে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয়, যা দেখতে সাদা ফেনার মতো। অনেক সময় দুর্গন্ধযুক্ত ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জও ইস্ট সংক্রমণে উপসর্গ হতে পারে।

ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণের চিকিৎসা
এই সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গোপনাঙ্গ সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা সাধারণত অ্যান্টিফাঙ্গাল বা অ্যান্টিবায়োটিক্স ওষুধই প্রেস্ক্রাইব করেন। চিকিৎসকের মতে, চিকিৎসাধীন থাকলে মোটামুটি এক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠা যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এই রোগ পুনরায় ফিরে আসে। সেক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে।
পাশাপাশি লাইফস্টাইলে কিছু বদল আনার মাধ্যমে ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে পারবেন। খাদ্যতালিকায় প্রোবায়োটিক্স সমৃদ্ধ খাবার (দই, পনির, ঘোল, ডার্ক চকলেট) রাখতে পারেন। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখারও চেষ্টা করুন।
এনএম

