একজন নারীর জীবনে মা হওয়ার যাত্রাপথ যেমন আনন্দের, তেমনি কষ্টের। দীর্ঘ ৯ মাস নানা স্বাস্থ্য পরিবর্তনের মধ্যে যেতে হয় নারীদের। এমন হঠাৎ বদলের সঙ্গে অনেকসময় শরীর মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে বাড়ে সমস্যা। গর্ভকালীন একটি সাধারণ সমস্যা হলো পিঠ ও কোমরে ব্যথা। প্রায় সব নারীই এই সমস্যায় ভোগেন।
গর্ভাবস্থায় পিঠ বা কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই পেইনকিলারে ভরসা রাখেন। এতে নিজের ও গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তারচেয়ে বরং এই ব্যথা কমাতে কিছু ঘরোয়া উপায়ে ভরসা রাখতে পারেন। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই-
বিজ্ঞাপন

গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা কেন হয়?
মেরুদণ্ডের হাড়ের একটি নির্দিষ্ট গঠন রয়েছে। তবে প্রেগন্যান্সির সময় ইউটেরাস বড় হয়ে যায়। ফলে সুষুম্নাকাণ্ডের হাড়ের গঠনে বদল আসে। এতে কোমর এবং পিঠের দিকে তীব্র ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে লাম্বার লর্ডোসিস বলা হয়। অনেক নারীই গর্ভাবস্থায় এই সমস্যার সম্মুখীন হন। এর আরও কিছু কারণ আছে-
আরও পড়ুন- গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য, সামলাতে করণীয়
ভারসাম্য বদলে যাওয়া
প্রেগন্যান্সির সময় পেটের ভার বাড়ে। তা সামনের দিকে বেরিয়ে আসে। ফলে শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য বদলে যায়। এতে পিঠ ও কোমরের হাড়ের উপর চাপ বাড়ে। সেই কারণে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

প্রোজেস্টেরন হরমোন
গর্ভাবস্থায় প্রোজেস্টেরন হরমোন শরীরকে সুরক্ষা দেয়। অনেকক্ষেত্রে এই হরমোন অতি সক্রিয় হয়ে পেশিকে অতিরিক্ত শিথিল করে দেয়। ফলে হাড়ের উপর চাপ বৃদ্ধি পায়। এই কারণে পিঠে, কোমরে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
গর্ভাবস্থায় পিঠ ও কোমর ব্যথা হলে কী করবেন?
ভুলেও ব্যথার ওষুধ বা পেইনকিলার খাবেন না। এসময় অহেতুক ওষুধ খেলে হবু মায়ের পাশাপাশি ক্ষতি হতে পারে গর্ভের শিশুর। তাই এই ভুল করা যাবে না। তার বদলে ব্যথাযুক্ত স্থানে ঠান্ডা সেঁক দিন। ব্যথার মলম লাগান। তাতে যন্ত্রণা কমবে। ভুলেও আবার গরম সেঁক দেবেন না। এতে ব্যথা কমবে না, উল্টো সমস্যা বাড়বে।

ব্যায়াম করুন
এই সমস্যা প্রতিরোধ করতে প্রেগন্যান্সির শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো কিছু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করুন। পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটাহাঁটিও করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করুন।
আরও পড়ুন- গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার ভুলেও খাবেন না
সামান্য ওষুধ খেতে হতে পারে
এসব টোটকায় কাজ না হলে চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি আপনাকে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ওষুধ দেবেন। সেসঙ্গে প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। তাই বলে নিজে থেকেই ওষুধ খেয়ে ফেলবেন না। এতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
এনএম

