একজন নারীর গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত সতর্কতা বজায় রাখা জরুরি। নইলে কোন ফাঁকে যে বিপদ চলে আসে, তা ধরতে পারবেন না। এক্ষেত্রে গর্ভবস্থায় কিছু খাবার থেকেও দূরে থাকা দরকার। জানুন কোন কোন খাবার গর্ভকালীন সময়ে খাবেন না।
১. কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ মাছ
বিজ্ঞাপন
হবু মায়ের খাবার রান্নার সময় বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। এই সময়ে কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ মাছ খাওয়া চলবে না। আসলে অর্ধসিদ্ধ মাছে থাকতে পারে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু। সেই জীবাণু কিন্তু জটিল অসুখ তৈরি করে। এক্ষেত্রে নোরো ভাইরাস, ভিব্রিও, সালমোনেল্লা, লিস্টেরিয়া ইত্যাদি ক্ষতিকর জীবাণু মায়ের দেহে বাসা বাঁধতে পারে। এর থেকে ভয়ংকর রোগভোগের আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই মাছ রান্নার সময় ভালো করে ধুয়ে, সম্পূর্ণ সিদ্ধ করে খান। এতেই সুরক্ষিত থাকবেন।
২. অর্ধসিদ্ধ মাংস বা প্রসেসড মিট
মাছের মতোই অর্ধসিদ্ধ মাংস খাওয়াও কিন্তু দেহের জন্য ভয়ংকর। এতেও ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইটস, যেমন- টোক্সোপ্লাসমা, ই-কোলি, লিস্টেরিয়া এবং সালমোনেল্লা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এই ধরনের সংক্রমণ থেকে স্টিল বার্থ, স্নায়ুর অসুখ, চোখের সমস্যা, মৃগী ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই চেষ্টা করুন মাংস সম্পূর্ণ সিদ্ধ করে রান্না করার। এমনকি সুপারমার্কেটের প্রসেসড মিটও এই সময় খাওয়া চলবে না।
৩. হাফ বয়েল ডিম
বিজ্ঞাপন
অনেকেই মনে করেন, ডিম সিদ্ধ করে খাওয়ার তুলনায় হাফ বয়েল বা অর্ধসিদ্ধ অবস্থায় খেলে বেশি উপকার মেলে। তবে এই ধারণা মিথ্যা।
জেনে রাখুন, অর্ধসিদ্ধ ডিম খেলে আদতে শরীরিক সমস্যার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এর মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে সালমোনেল্লা ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া জ্বর, বমি, পায়খানা, পেটে ব্যথার কারণ হতে পারে। আর গর্ভাবস্থায় এই পরিস্থিতি কিন্তু একদমই সুখদায়ক নয়। এর থেকে ভ্রূণের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

৪. অতিরিক্ত কফি
এতদিন কফি ছাড়া একদিনও চলতে পারতেন না? সারাদিনে কাপের পর কাপ চা-কফি খেয়ে গিয়েছেন? গর্ভধারণের পর কিন্তু এই অভ্যাস ছাড়তে হবে। এই সময়ে দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি চা বা কফি খেলে শরীরে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এমনকী গর্ভস্থ শিশুর ওজন বৃদ্ধি আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই দিনে ছোট কাপের ১-২ কাপ কফি খেতেই পারেন। এর থেকে বেশি খাওয়া উচিত নয়।
৫. মদ্যপান
মদ সবসময়ই খারাপ। বিশেষত, প্রেগন্যান্সির সময় নিয়মিত মদ্যপান করলে স্টিল বার্থের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এমনকি ভ্রূণের বিকাশ ঠিকমতো হয় না। এছাড়া ভ্রূণের ফেটাল অ্যালকোহল সিনড্রোম হতে পারে। এতে জন্মের পর শিশুর হার্টের সমস্যা সহ একাধিক অঙ্গের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।। এমনকি শিশুর বুদ্ধিও কমতে পারে। তাই সাবধান থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এজেড

