অপেক্ষা কেবল রাত পোহানোর। এরপরই আসবে নতুন বছর। ইংরেজি বর্ষবরণ। আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠবে পুরো বিশ্ব। স্বাগত জানাবে নতুন বছরকে। তবে কবে থেকে এই বর্ষবরণ উৎসব শুরু হয়েছে? হ্যাপি নিউ ইয়ার সৃষ্টির ইতিহাস কি জানা আছে আপনার? চলুন আজ জানা যাক-
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- বিড়াল অতিরিক্ত ‘মিঁয়াও’ করে কেন?
বলা হয়, পৃথিবীতে যতোগুলো উৎসব পালন করা হয়, এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন উৎসব হলো বর্ষবরণ উৎসব। এই উৎসবের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে চলে যেতে হবে সুদূর মেসোপটিমিয় সভ্যতার যুগে।
বিজ্ঞাপন
প্রায় ৪ হাজার বছর আগে শুরু হয় নিউ ইয়ার পালন, খ্রিষ্টপূর্ব ২ হাজার অব্দ নাগাদ। মেসোপটিমিয়ান সভ্যতার মোট ৪টি ভাগ রয়েছে। এগুলো হলো সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যবিলনীয় সভ্যতা, অ্যাসরিয় সভ্যতা ও ক্যালডিয় সভ্যতা। নিউ ইয়ার উৎসব প্রথম শুরু হয় ব্যবিলনীয় সভ্যতায়।
আরও পড়ুন- সাদা ফুল রাতে ফোটে কেন?
সেসময়ও বেশ ধুমধাম করে জাঁকজমকভাবে নিউ ইয়ার ডে পালন করা হতো। তবে তা জানুয়ারির ১ তারিখ নয় নয়। তখন বসন্তের প্রথম দিনকে নতুন বছরের সূচনা ধরা হতো। বসন্তকালের প্রথম দিনেই পালন করা হতো বর্ষবরণ উৎসব।
সেই যুগে ক্যালেন্ডারের প্রচলন ছিল না। তখন আকাশে চাঁদের অবস্থান দেখে বছর গণনা করা হতো। চাঁদ অবস্থান অনুযায়ীই পালন করা হতো এই উৎসব। বসন্তের প্রথম চাঁদ উঠত যেদিন, সেদিনকেই নিউ ইয়ার ডে হিসাবে ধরা হতো। এই উৎসব চলত টানা ১১ দিন ধরে। এই ১১ দিনের আবার আলাদা আলাদা তাৎপর্যও ছিল।
আরও পড়ুন- ভাত খাওয়ার পর ঘুম আসে কেন?
এরপর আসে রোমান সভ্যতা। রোমানরাও নিউ ইয়ার পালন করতেন। রোমান সম্রাজ্যে ১ মার্চকে নববর্ষ হিসাবে ধরা হতো। এদের একটি ক্যালেন্ডারও ছিল। রোমানদের এই ক্যালেন্ডারে ১০টি মাস ছিল। জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির কোনো উল্লেখ ছিল না রোমান ক্যালেন্ডারে। পরে অবশ্য নুমা পন্টিলাস নামের এক সম্রাট ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি যোগ করেন।
খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দে বর্ষবরণের দিন হিসাবে ধরা হতো ২৬ মার্চ তারিখটিকে। পরবর্তীতে সম্রাট পন্টিলাস ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি যোগ করার পর ১ জানুয়ারি দিনটিকেই বর্ষবরণের দিন হিসাবে ঠিক করেন। তখন থেকেই ঠিক করা হয় যে ১ জানুয়ারি দিনটি হলো নিউ ইয়ার ডে বা বর্ষবরণ দিন। কিন্তু এই দিনটি নিউ ইয়ার ডে হিসাবে ঠিক করা হলেও, মার্চের ১ তারিখকেই নিউ ইয়ার ডে হিসাবে পালন করতেন রোমানরা।
এরপর জুলিয়াস সিজার ৩৬৫ দিনে ১ বছর হিসাবে ধরার ঘোষণা করেন। তখন ফের ১ জানুয়ারিকেই নিউ ইয়ার হিসাবে ধরার কথা ঘোষণা করা হয়। তবে সমস্যা ছিল সিজারের ক্যালেন্ডারেও। পরবর্তীতে অ্যালোসিয়াস লিলিয়াস নামের এক চিকিৎসক সেই সমস্যা দূর করে দেন। আজও সেই ক্যালেন্ডারেরই প্রচলন রয়েছে বিশ্বজুড়ে।
পোপ গ্রেগরির নাম অনুসারে নতুন এই ক্যালেন্ডারের নাম হয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। প্রায় ৪৩২ বছর আগে ১৮৫২ সাল নাগাদের ঘটনা। তখন থেকেই ভালোমতো শুরু হয় ক্যালেন্ডারের প্রচলন। বিশ্বব্যাপী এই ক্যালেন্ডার ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ১ জানুয়ারির বর্ষবরণ উৎসব হিসাবে পালন হতে শুরু করে। এদিন পৃথিবী জুড়ে সবাই হ্যাপি নিউ ইয়ার উৎসব পালন করেন।
এনএম
