সকালে টয়লেটে গেলে অনেকেরই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এজন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে শুরু করে সহকর্মী, বন্ধু অনেকের হাসি-ঠাট্টার পাত্র হতে হয়। আসলে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। আর মলের সঙ্গে যদি রক্তপাত দেখা দেয় তবে তো চিন্তার কারণ আরও বাড়ে।
কেউ কেউ মনে করেন মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য বা অর্শের ইঙ্গিত। তাই খুব একটা আমলে নেন না এই সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যাটি কোলন ক্যানসারের বা মলাশয়ের ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে। তাই আগাম সতর্ক হওয়া জরুরি।
বিজ্ঞাপন
কোলন ক্যানসারের লক্ষণ
বৃহদান্ত্রের কোষগুলোর বৃদ্ধি অস্বাভাবিক হারে হলে এই অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে। অন্ত্রে দীর্ঘস্থায়ী কোনো মাংসল অংশের বৃদ্ধি এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান, ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার ইত্যাদি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- কোষ্ঠকাঠিন্য কি কোলন ক্যানসারের লক্ষণ
সাধারণত, পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে এখন কম বয়সীরাও এই অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিছু উপসর্গ জানা থাকলে শুরুতেই এই রোগের চিকিৎসা করানো যায় এবং সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে।
যেসব উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন
মাঝবয়সে হঠাৎ মলত্যাগের অভ্যাস বদলে গেলে সতর্ক হোন। পর্যায়ক্রমে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই ক্যানসারের উপসর্গ হিসেবে মলের সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষই একে পাইলস বলে ভুল করেন। এর আরও কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে পেটে অস্বস্তি (ক্রনিক গ্যাস, খিঁচুনির মতো পেটে ব্যথা), হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খিদের বোধ কমে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি। খেতে ইচ্ছে না করা, সারাক্ষণ বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলেও সতর্ক হোন।
আরও পড়ুন- অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের ১৩ লক্ষণ
ঝুঁকি এড়াতে করণীয়
চিকিৎসকদের মতে, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা, মদ্যপান ও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ, রেড মিট খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ, ঠিক সময় অন্যান্য ক্রনিক অসুখের চিকিৎসার মাধ্যমে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
এসব শারীরিক নিয়মনীতি মেনে চললেই এই অসুখের আশঙ্কা কমিয়ে আনা যায় অনেকটা। পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্যাভ্যাসে। রোজকার খাবারে যোগ করুন পর্যাপ্ত টাটকা ফলমূল, শাকসবজি, ইসবগুলের ভূষিসহ আটার রুটি, ওটস, মিলেট ইত্যাদি।
আরও পড়ুন- ভিনেগারে ভেজানো পেঁয়াজ খেলে কী হয়?
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায় যাওয়ার আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এতে বড় সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে।
এনএম