আট বছর ধরে চলা ইয়েমেন যুদ্ধ অবশেষে বন্ধ হওয়ার একটি উপলক্ষে এসে পৌঁছেছে। এ নিয়ে ওমানের মধ্যস্ততায় হুথি বিদ্রোহী ও সৌদি আরব কাজ করছে। ইয়েমেনের রাজধানী সানায় এক টেবিলে বসেছে সব পক্ষ। আশা করা হচ্ছে ঈদের আগেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। বাকি আলোচনা চলতে থাকবে।
সৌদি আরব ও ওমানের প্রতিনিধিরা রোববার ইয়েমেনের রাজধানী সানায় হুথি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। যুদ্ধ শুরুর পর এমন সফর ও আলোচনা ঐতিহাসিক। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরান চীনের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তিতে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হওয়ার পর শান্তি উদ্যোগগুলো গতি পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী দেশ ওমান বহু বছর ধরে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করছে। অবশেষে সেটি সফল হতে চলেছে।
হুথি বার্তা সংস্থা সাবা জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে সানায় পৌঁছানো প্রতিনিধিরা সানার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হুথি সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিলের প্রধান মাহদি আল-মাশাতের সঙ্গে দেখা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মাহদি আল-মাশাত তাদের সঙ্গে আলোচনায় তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন যে, তারা সম্মানজনক শান্তি চায় এবং ইয়েমেনি জনগণের স্বাধীনতা চায়।
উভয় পক্ষই শত্রুতার অবসান এবং ইয়েমেনি বন্দরগুলোর উপর সৌদি নেতৃত্বাধীন অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সৌদি-হুথি আলোচনায় হুথি-নিয়ন্ত্রিত বন্দর এবং সানা বিমানবন্দর সম্পূর্ণ পুনরায় চালু, সরকারি কর্মচারীদের জন্য বেতন প্রদান, পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা এবং দেশ থেকে বিদেশি বাহিনীর প্রস্থান করার সময়সীমা নিয়ে আলোচনা করেছে।
ইয়েমেনে সংঘাত ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল, যখন হুথিরা সানা এবং দেশের উত্তরের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার প্রধান তখন পালিয়ে সৌদি আরবে আশ্রয় নেন।
এরপর সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। অপরদিকে হুথিদের ইরান সর্বাত্মক সহযোগিতা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সংঘাতকে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়।
এই যুদ্ধে ইয়েমেনে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বহুবার সেখানকার ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। হাজার হাজার মানুষ খাদ্যাভাবে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে। হাজারো শিশু অপুষ্টিতে ভুগে প্রাণ হারিয়েছে।
সম্প্রতি সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনের জন্য চুক্তি করেছে ইরান ও সৌদি আরব। চীনের মধ্যস্ততায় হওয়া এই চুক্তির অধীনে এরই মধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেছেন ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছেন। ইয়েমেন যুদ্ধ থামানোর প্রক্রিয়ায় এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স
একে