সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশলে উচ্ছ্বসিত রাশিয়া, উদ্বেগে ইউরোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫২ এএম

শেয়ার করুন:

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশলে উচ্ছ্বসিত রাশিয়া, উদ্বেগে ইউরোপ

যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য প্রকাশিত জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। ৩৩ পৃষ্ঠার এই নথির বেশিরভাগ রাশিয়ার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে মস্কো। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের কর্মকর্তা এই কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্থানীয় সময় রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, নিরাপত্তা কৌশলকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। পাশাপাশি, মস্কো নথিটি আরও বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত মন্তব্য জানাবে।


বিজ্ঞাপন


বিদেশি প্রভাব মোকাবিলা, অভিবাসন বন্ধ করা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কথিত সেন্সরশিপ নীতির বিরোধিতা, এসব বিষয়কে নতুন কৌশলে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
 
নথিতে আরও বলা হয়, কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের অর্থনীতি ও সেনাবাহিনী ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত শক্তিশালী থাকবে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপের কিছু দেশে ‘জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর’ প্রভাব বৃদ্ধির প্রশংসা করা হয়েছে।

নতুন কৌশলে আমেরিকা ফার্স্ট নীতিকে কেন্দ্র করে ক্যারিবিয়ান ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদকবাহী নৌযানগুলোকে লক্ষ্য করে অভিযান চালানো, এমনকি ভেনেজুয়েলায় সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

কৌশলপত্রে রাশিয়াকে ঘিরে তুলনামূলক নরম ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে বলে উদ্বেগ জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাদের আশঙ্কা, এতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রশ্নে মস্কোর ওপর পশ্চিমাদের চাপ দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা ব্যাহত করতে ইইউ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনলে তা ইউরোপের সামগ্রিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে পারে।
 
নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ভেদেফুল বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা আমাদের সমাজব্যবস্থা কেমন হবে, এসব বিষয় কৌশলগত নথিতে থাকা উচিত কি না, বিশেষত জার্মানির ক্ষেত্রে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’


বিজ্ঞাপন


পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সামাজিক মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, ‘ইউরোপ আপনার ঘনিষ্ঠতম মিত্র, আপনার সমস্যা নয়। আপনার আর আমাদের শত্রু একই।’ অন্যদিকে সুইডেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কার্ল বিল্ট মন্তব্য করেন, ‘নথিটি চরম ডানপন্থী অবস্থানেরও ডান দিকে অবস্থান করছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা বলেছেন, এই নথি দেশের বৈদেশিক সম্পর্ককে ধ্বংস করে দিতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত কমিটিতে থাকা কলোরাডোর প্রতিনিধি জেসন ক্রো বলেন, ‘এটি বিশ্বে আমেরিকার অবস্থানকে বিপর্যস্ত করবে।’

নিউইয়র্কের প্রতিনিধি গ্রেগরি মিকস বলেন, ‘কৌশলটি মূল্যভিত্তিক মার্কিন নেতৃত্বের কয়েক দশকের ধারা নষ্ট করে দিয়েছে।’
 
এদিকে, রোববার কাতারের দোহায় এক সম্মেলনে ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বলেন, ‘কিয়েভকে সহায়তা করা থেকে সরে আসতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’

ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ট্রাম্প জুনিয়র বলেন, ‘ইউক্রেনের দুর্নীতিগ্রস্ত ধনীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছেন।’

এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর