মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গাজায় নতুন সশস্ত্র দলের সঙ্গে হামাসের সংঘাতে নিহত ৩৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজায় নতুন সশস্ত্র দলের সঙ্গে হামাসের সংঘাতে নিহত ৩৮

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ‘দগমোশ’ নামে নতুন একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে। উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে গত কয়েক দিনে গাজার বিভিন্ন এলাকায় দগমোশের সংঘাতও হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি সংঘাত হয়েছে গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিতে। ১০ অক্টোবর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজা সিটিতে হামাস-দগমোশ সংঘাতে নিহত হয়েছেন ৩৮ জন। খবর রয়টার্সের।


বিজ্ঞাপন


এদের মধ্যে ৩২ জন দগমোশ গোষ্ঠীর, বাকি ৬ জন হামাসের। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে হামাসের একদল সশস্ত্র যোদ্ধাকে সড়কে হাঁটু গেড়ে বসা ৭ জন মানুষকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করতে দেখা গেছে। 

এ সময় বেশ কয়েক জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি সেখানে ছিল। তারা সবাই ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে হামাসকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বেসামরিকদের কয়েক জনকে বলতে দেখা গেছে, এই নিহতরা ইসরায়েলি বাহিনীর সহযোগী ছিল।

ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর অস্থায়ী পুলিশের ভূমিকায় নেমেছেন হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা।


বিজ্ঞাপন


এ যুদ্ধবিরতিতে নেতৃত্ব দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনক্রমেই এটি ঘটেছে।

সোমবার সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছিলেন, তারা (হামাস) আসলে সমস্যা থামাতে চায় না এবং ইতোমধ্যে তারা তা স্বীকারও করেছে। আমরা কিছু সময়ের জন্য তাদের (গাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য) অনুমোদন দিয়েছি।

গাজা এক সময় ফিলিস্তিনের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ফাতাহ এবং পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি জোট প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি (পিএ)-এর অধীনে ছিল। 

২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজা থেকে ফাতাহ এবং পিএ জোটকে বিতাড়িত করে হামাস। ২০০৬ সালের পর আর গাজায় নির্বাচন হয়নি।

তবে নির্বাচন না হলেও গাজায় হামাসের বিরোধী লোকজন ছিল, কিন্তু কঠোর নিয়ন্ত্রণবাদী শাসনের কারণে এই বিরোধীরা মাথাচাড়া দিতে পারেনি।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গাজায় হামাসের শুধু ইসরায়েলি সেনারা অভিযান চালাচ্ছে না, হামাসবিরোধী কয়েকটি গোষ্ঠীও লড়াই করছে। 

এই গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েল অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। নেতানিয়াহু কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নাম বলেননি, তবে ধারণা করা হচ্ছে— তিনি দগমোশ গোষ্ঠীকেই ইঙ্গিত করেছিলেন। 

গাজায় এই মুহূর্তে দগমোশ সবচেয়ে বড় হামাসবিরোধী গোষ্ঠী। গাজায় সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয় হামাসবিরোধী নেতার নাম ইয়াসের আবু শাবাব। 

দগমোশ গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা তিনিই। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফার বাসিন্দা ইয়াসের। তার নিরাপত্তার জন্য এখনও রাফা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেনি ইসরায়েল।

২০২৪ সাল থেকে যোদ্ধা সংগ্রহ শুরু করেছে দগমোশ গোষ্ঠী। ইতোমধ্যে কয়েকশ’ যোদ্ধা সংগ্রহ করে ফেলেছে গোষ্ঠীটি। প্রত্যেক যোদ্ধাকেই প্রদান করা হচ্ছে উচ্চ বেতন।

যুদ্ধবিরতির পর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে ইয়াসের আবু শাবাবের ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য যোদ্ধা ও সংগঠক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে হামাস। 

দগমোশ গোষ্ঠী বা আবু শাবাবের তরফ থেকে এ দাবির কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে এক ভিডিওবার্তায় দগমোশ গোষ্ঠীর অন্যতম সংগঠক হুসাম আল-আস্তাল বলেছেন, হামাস আর কোনো দিন গাজার ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না। তাদের সময় শেষ হয়ে গেছে।

-এমএমএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর