জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বিশ্বখ্যাত জলবায়ু আন্দোলনের আইকন গ্রেটা থানবার্গের ত্রাণবাহী ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের জাহাজটি গাজায় নিরাপদে নোঙর করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলকে।
ইতালির উপকূল থেকে রোববার যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। এতে খাদ্য, ওষুধ ও শিশুপণ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ত্রাণসামগ্রী রয়েছে, যা গাজার সংকটাপন্ন জনগণের জন্য বহন করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজার মানুষ এখন ধ্বংসের মুখে। এই ত্রাণ মিশন এক প্রতীকী এবং সাহসী প্রয়াস—যার মাধ্যমে অনেকগুলো প্রাণরক্ষা সম্ভব।’
তারা স্মরণ করিয়ে দেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফ্লোটিলার আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলের অধিকার রয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব জলসীমা দিয়ে সহায়তা গ্রহণ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অতীতের মতো হামলার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন। মে মাসের শুরুর দিকে মাল্টার উপকূলে ফ্লোটিলার এক জাহাজে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
তারা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে গাজা পুরোপুরি অবরুদ্ধ। ২ মার্চের পর থেকে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, গত ৮০ দিনেরও বেশি সময় ধরে প্রায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধ রয়েছে।
ইসরায়েলকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশ মেনে ত্রাণের নির্বিঘ্ন প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে,’ বলেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
তারা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনকে (যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত) নিরপেক্ষতা ও মানবিকতার নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন।
বর্তমান গাজা পরিস্থিতিকে ‘সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা জাতিসংঘকে ‘ইউনাইটিং ফর পিস’ প্রস্তাবের আওতায় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গাজায় চলমান গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আইনগত দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য রয়েছে।’
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, ২০ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে।
-এমএমএস