মিয়ানমারে ভূমিকম্পের কারণে জোরালো কম্পন অনুভূত হয় প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেও। ভেঙে পড়ে নির্মাণাধীন ৩০তলা ভবন। এখন পর্যন্ত সেখানে ১০ জনের মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। নিখোঁজ প্রায় ১০০ জন।
বহু শ্রমিক ওই বহুতল ভবনে কাজ করছিলেন। কেউ বেঁচে গিয়েছেন বরাত জোরে। কেউ কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছেন। খবর এএফপির।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে প্রত্যক্ষদর্শী এক শ্রমিক ভূমিকম্পের মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন। তার চোখের সামনেই ৩০তলা বাড়ি ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। সেই সময়ে তার ভাই বহুতল ভবনে কাজ করতে ঢুকেছিলেন।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে ওই প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক খিন আং জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ককে ৩০তলা বহুতলটি তৈরির কাজে তিনি এবং তার ভাই যুক্ত ছিলেন। বহু সরকারি দফতর ওই বহুতলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
এটি তৈরি কাজ প্রায় শেষের দিকে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তার মাঝেই ভূমিকম্পে ধূলিসাৎ হয়ে গেল তাদের নির্মাণ।
বিজ্ঞাপন
ওই শ্রমিক বলেন, শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ সবে আমার কাজ (শিফ্ট) শেষ হয়েছিল। আমি একটু পানি খেতে বহুতল থেকে বাইরে বেরিয়েছিলাম। বেরোতে বেরোতে দেখলাম, আমার ভাইটা ভিতরে ঢুকল। ওর কাজ তখন থেকে শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু বাইরে বেরিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখলাম চারদিকে ধুলো আর ধুলো। দেখলাম বহুতল ভেঙে পড়ছে। আমি প্রাণপণে ছুটেছি। আর কিছু দেখার সুযোগ পাইনি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ৩০তলা ভেঙে পড়ল। ভাইটা ভিতরেই ছিল।
ঘটনার ভয়াবহতা যেন পিছু ছাড়ছে না যুবককে। তিনি বলেন, ওই সময় আমার যে কী মনে হচ্ছিল, বলে বোঝাতে পারব না। চোখের পলকে সব শেষ হয়ে গেল। তার ভাইকে উদ্ধার করা গিয়েছে কি না, তিনি কী অবস্থায় আছেন, এখনও স্পষ্ট নয়।
শুক্রবার সকালে মিয়ানমারে পর পর দু’বার জোরালো ভূমিকম্প হয়। প্রথম কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। পরে ‘আফটারশক’ (ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পন) হয় ৬.৪ মাত্রার। এই দুই কম্পনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাঙ্ককেও।
৩০তলা বহুতল ভেঙে ব্যাঙ্ককে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। বহু শ্রমিক ওই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ।
মিয়ানমারের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে সে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০০২। আহত ২৩০০-র বেশি মানুষ। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে মিয়ানমার।
প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারত থেকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রথম দফার বিমান পৌঁছেছে মিয়ানমারে। অন্তত ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী সেখানে পাঠিয়েছে ভারত।
-এমএমএস