ইসরায়েলি হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করেছে ফিলিস্তিনিরা। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনারা নতুন করে যে আগ্রাসন শুরু করেছে তার বিরুদ্ধে শক্ত জবাব দিচ্ছে হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলন। ফিলিস্তিনের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গাজার কয়েকটি এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে।
গাজা উপত্যকার কাছের কয়েকটি ইহুদি বসতিতে সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা গাজা থেকে ছোঁড়া একটি রকেট ভূপাতিত করেছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ‘গাজায় যুদ্ধ করে ইসরায়েল তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না’
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার উত্তরে ইসরায়েলের সেদরত শহরে বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে সেখানে আগুনের কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ছোঁড়া রকেটে ইসরায়েলি সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
জিহাদ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেড বলেছে, তারা মানবতা-বিরোধী অপরাধের প্রতিবাদে ইসরায়েলের শহরগুলোতে রকেট হামলা চালিয়েছে। হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য ইজ্জাত আল-রাশক বলেছেন, গত ৫০ দিনে ইসরায়েল যা অর্জন করতে পারেনি, নতুন করে আগ্রাসন শুরু করেও তা অর্জন করতে পারবে না।
তারা মতে, গাজায় যুদ্ধ করে ইসরায়েল তার কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারবে না।
বিজ্ঞাপন
এ সময় ইজ্জাত আল-রিশক ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ় সংকল্প এবং প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বীরত্বের প্রশংসা করেন। একইসাথে তিনি বলেন, আমরা বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি হামলার বিরোধিতা করি। আমরা তাদের অপরাধ, নাৎসি আগ্রাসনের নিন্দা করছি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: ৭ দিনের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সে দিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ অভিযান শুরু করে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে যে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ছয় হাজার শিশু-সহ ১৪ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’
সূত্র : আল-জাজিরা, প্রেস টিভি, মিডল ইস্ট আই
এমইউ