ফিলিস্তিনের গাজা থেকে নেকলেস চুরি করেছে এক ইসরায়েলি সেনা। মিডল ইস্ট আই এ খবর প্রকাশ করেছে।
শনিবার অনলাইনে শেয়ার করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে যে একজন ইসরায়েলি সৈন্য গাজার একটি বাড়ি থেকে নেকলেস চুরি করেছে। এরপর ওই ইসরায়েলি সেনা বলেছে, এ নেকলেসটি সে তার বান্ধবীকে দেবে।
বিজ্ঞাপন
ফিলিস্তিনিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে বোমা হামলায় বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বাড়িতে ঢুকে তাদের জিনিসপত্র চুরি করেছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নানান বিধি-নিষেধ
অরপদিকে ইসরায়েল বলেছে যে তারা গাজা থেকে বিপুল অর্থ লুট করেছে। তারা জানিয়েছে, গাজায় পাঁচ মিলিয়ন শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) জব্দ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার ঘোষণা করেছে, ‘তারা ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বোমাবর্ষণের সময় তাদের বাহিনী পাঁচ মিলিয়ন শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) জব্দ করেছে। এটা প্রায় ১৩ লাখ ডলারের সমান।’
ইসরায়েল আরও বলেছে যে তারা ইরাকি দিনার, জর্দানিয়ান দিনার এবং মার্কিন ডলার জব্দ করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব অর্থ তারা রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যয় করবে।
এবার উত্তর গাজা থেকে হাজারে হাজার ফিলিস্তিনির পালিয়ে প্রধান সড়ক দিয়ে হেঁটে দক্ষিণে যাওয়ার যে দৃশ্য সেটা অনেককেই ১৯৪৮ সালে আরবদের বিপক্ষে ইসরায়েলের স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
যে সাত লাখেরও বেশি মানুষ ইসরায়েলি বাহিনীর অস্ত্রের মুখে তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে সেটাকে ফিলিস্তিনিরা আল নাকবা বা মহাবিপর্যয়ের সঙ্গেও তুলনা করছে। সেই ১৯৪৮ সালের শরণার্থীদের পরের প্রজন্মের বেশিরভাগই এখন গাজা উপত্যকার বাসিন্দা।
আর কিছু উগ্র ইহুদী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যারা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমর্থক, তাদের অনেকের ফিলিস্তিনিদের ওপর আরেকটি নাকবা আরোপের মতো ভয়ংকর কথাবার্তা, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র শিবিরেরই কিছু আরব দেশ বিশেষ করে জর্ডান ও মিসরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
এমনকি নেতানিয়াহু সরকারের একজন মন্ত্রী তো হামাসকে মোকাবেলা করার জন্য গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার ইঙ্গিতও দেন। তাকে তিরস্কার করা হলেও বহিষ্কার করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা মাতৃভূমি পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত লড়বে’
এসবকে পাগলের আলাপ বলে উড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু জর্ডান ও মিসর এ বিষয়টাকে গুরুত্ব সহকারেই নিয়েছে।
আর যদি গাজায় যুদ্ধের কথা বলা হয়, তাহলে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের উচ্চপদস্থ কূটনীতিকরা বিবিসিকে বলেছেন, যুদ্ধ এবং তার পরবর্তি পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হবে খুবই ‘কঠিন এবং বিশৃঙ্খল’।
একজন বলেছেন, “একমাত্র রাস্তা হবে ফিলিস্তিনের জন্য একটা রাজনৈতিক দিগন্ত পুন:নির্মান করা।” তিনি মূলত ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে ইঙ্গিত করেছেন, তথাকথিত ‘টু-স্টেট’ সমাধান, যা ব্যর্থ হয়ে এখন শুধু স্লোগানেই টিকে আছে।
সেটাকে পুনরুজ্জীবিত করা, ইসরায়েল ও আরবের মধ্য থেকে তাদের জায়গা বের করা খুবই উচ্চভিলাষী পরিকল্পনা এবং একইসাথে সম্ভবত বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভালো সমাধানও।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই, বিবিসি
এমইউ