সাময়িক যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ফিলিস্তিনিদের ওপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এ সময় ফিলিস্তিনিদের সমুদ্রে যেতেও নিষেধ করেছে তারা। অপরদিকে এ বিষয়টি নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য বিধি-নিষেধের রূপরেখা দিয়ে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে রোববার ভোরে একটি সতর্কতা জারি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ পোস্ট করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকরা নিজ অবস্থানে থাকবেন, তাদের দক্ষিণে যেতে দেওয়া হবে না এবং উত্তরেও যেতে দেওয়া হবে না। ফিলিস্তিনিদের জন্য সমুদ্রে যাওয়াও নিষেধ।
বিজ্ঞাপন
সাত সপ্তাহের অবিরাম বোমাবর্ষণের পর অনেক ফিলিস্তিনি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে অল্প সময়ের জন্য সাগরে ছুটে আসেন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল
যুদ্ধের সময় ইসরায়েল গাজার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেওয়ায় কিছু ফিলিস্তিনি সমুদ্রে যেয়ে গোসল করেন এবং সেখানকার পানিতে কাপড় ধোয়ার জন্য যান।
অপরদিকে ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, সংগঠনটি ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। তবে দখলদার শক্তি যদি এ চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে ইসলামি জিহাদ তেল আবিবকে 'উপযুক্ত জবাব’ দেবে।
বিজ্ঞাপন
ইসলামি জিহাদের সামরিক বাহিনী আল-কুদস ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু-হামজা গতকাল (শনিবার) এক ভিডিও বার্তায় এ হুমকি দিয়েছেন। কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা নিউজ চ্যানেলে প্রচারিত ওই বার্তায় তিনি বলেন, আল-কুদস ব্রিগেড ততক্ষণ পর্যন্ত তার সামরিক তৎপরতা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ বন্ধ রাখবে, যতক্ষণ দখলদার ইসরায়েল চুক্তিতে অটল থাকবে। কিন্তু তেল আবিব তা লঙ্ঘন করলে আল-কুদস ব্রিগেড উপযুক্ত জবাব দেবে।
আবু হামজা বলেন, গত ৪৮ দিনে ইসরায়েলি অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে তাদের যোদ্ধারা শত শত রকেট ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের পক্ষে লন্ডনে তিন লাখ মানুষের বিক্ষোভ
ইসলামি জিহাদের এই সামরিক মুখপাত্র বলেন, “আমরা আত্মসমর্পণ কিংবা সাদা পতাকা উত্তোলন করব না বরং এই যুদ্ধে বিজয়ের বেশে ফিরব।” তিনি বলেন, প্রতিরোধ যোদ্ধারা এবার আর ফিলিস্তিনি বন্দীদেরকে ইসরায়েলি জেলখানায় আটক থাকতে দেবে না। তারা তাদের লক্ষ্যগুলো অর্জন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
আল-কুদস ব্রিগেডের মুখপাত্র বলেন, আরব ও ইসলামের সম্মান রক্ষা করার এই যুদ্ধে পশ্চিম তীরের যোদ্ধারা গাজা উপত্যকার যোদ্ধাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সমর্থনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে হামলা চালাচ্ছে সেদিকেও ইঙ্গিত করেন আবু হামজা। তিনি বলেন, লেবাননের যোদ্ধারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংগঠিত ও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, সামনের দিকে যা ঘটবে তা হবে আরও ভয়াবহ। তিনি ইরাক ও ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের গাজা যুদ্ধে অংশগ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গাজা উপত্যকায় ৪৮ দিনের যুদ্ধের পর গত শুক্রবার থেকে চার দিনব্যাপী সাময়িক যুদ্ধবিরতি চলছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল ও হামাস পরস্পরের বন্দীদের মুক্তি দিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র : আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট আই, প্রেস টিভি
এমইউ