গাজার আল-শিফা হাসপাতালে চালানো সামরিক অভিযান ইসরায়েলিদের পরাজয় ও ব্যর্থতার প্রমাণ। ওই হাসপাতালে কিছুই পায়নি তারা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মূলত একটি মরীচিকার পিছনে ছুটছে। হামাস কর্তৃপক্ষ এ মন্তব্য করেছে।
শুক্রবার ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা বলেন, ‘নেতানিয়াহু এবং তার যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রিসভা এখন একটি অবাস্তব বিষয় খুঁজছেন। এটা তাদের অক্ষমতা এবং ফাঁকা ঔদ্ধত্য নির্দেশ করেছে। এটা ইসরায়েলিদের পরাজয় ও ব্যর্থতার প্রমাণ।
বিজ্ঞাপন
তিনি এমন সময় এ মন্তব্য করলেন যখন ওই হাসপাতালের নীচে হামাসের ‘কমান্ড সেন্টার’ রয়েছে দাবি করে গত কয়েক দিন ধরে সেখানে হামলা চালিয়ে হাসপাতালটিকে তছনছ করে ফেলেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।
আরও পড়ুন: আল-শিফা হাসপাতালের আইসিইউ’র বেশিরভাগ রোগীই মারা গেছেন
আবু ওবায়দা গতকাল (শুক্রবার) এক বক্তব্যে আল-শিফাকে নিয়ে তেল আবিবের দাবি কঠোর ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, “[ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন] নেতানিয়াহু আল-শিফায় যা খুঁজে বেড়াচ্ছেন তা চরম হাস্যকর।” তিনি ওই হাসপাতালে দখলদার সেনাদের অভিযানকে ‘মরিচিকা তল্লাশি অভিযান’ বলে বর্ণনা করেন।
সকল আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি-নীতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি সেনারা আল-শিফা হাসপাতালে যে বর্বরতা চালিয়েছে তাকে আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য ‘অপমানকর’ বলে মন্তব্য করেন কাসসাম ব্রিগেডের এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, যে আন্তর্জাতিক সমাজ মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের কথা বলে তারা একটি হাসপাতালে ট্যাংকের অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারেনি।
বিজ্ঞাপন
আবু উবায়দা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে তার বাহিনীর সংঘর্ষের বিবরণ দিয়ে বলেন, গত চার দিনে, আমাদের যোদ্ধারা মারকাভা ট্যাংক ও বুলডোজারসহ ৬২টি ইসরায়েলি সামরিক যানকে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা তিন দিন আগে একটি একক হামলায় ৯ ইসরায়েলি সেনাকে খতম করেছেন। এছাড়া, প্রতিনিয়ত হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলি সেনারা মারা পড়ছে এবং তারা বহু ফ্রন্টে পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু তেল আবিব তার নিহত সেনাদের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করছে না।
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত গাজা যুদ্ধে তাদের ৫১ সেনার নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে হামাস বলছে, এই সংখ্যা বহুগুণ বেশি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত চেয়েছে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশ
হামাসের এই সামরিক মুখপাত্র ইসরায়েলি নাগরিকদের উদ্দেশ করে বলেন, “তোমাদের নিহত সেনাদের সংখ্যা আজ হোক কিংবা কাল তোমরা শুনতে পারবে এবং সে সংখ্যাটি তোমাদের কল্পনার চেয়েও অনেক অনেক বেশি।”
হামাস একটি দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে- জানিয়ে কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র বলেন, ইসরায়েলি সেনারা যত দিন গাজায় অবস্থান করবে, তত দিন তাদের হতাহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
তিনি তার বক্তব্যের শেষাংশে ইসরায়েলি আগ্রাসনে চরম আত্মত্যাগ ও ধৈর্যধারণ করায় গাজাবাসী ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা চাইলে ‘বিজয় অথবা শাহাদাতের’ এ যুদ্ধে ফিলিস্তিনিরা বিজয়ী হবে।
সূত্র : প্রেস টিভি, আনাদোলু এজেন্সি
এমইউ