২০২২ সালের এপ্রিলে আফগানিস্তানে আফিম চাষের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তালেবান। জাতিসংঘের রিপোর্ট জানাচ্ছে, তালেবান শাসনে আফগানিস্তানে আফিমের উৎপাদন ৯৫ শতাংশ কমেছে। বিশ্বে আফিমের সরবরাহেও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
রোববার (৫ নভেম্বর) জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তালেবান সরকার আফিম চাষ ও মাদক নিষিদ্ধ করার পর থেকে আফগানিস্তানে এর উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমেছে। এর আগে বিশ্বে আফিমের সবচেয়ে বড় উৎস ছিল আফগানিস্তান। খবর রয়টার্সের
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধ দপ্তরের (ইউএনওডিসি) তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে আফগানিস্তানে ২৬ হাজার ৭০০ একর জমিতে আফিম চাষ হয়েছে। অথচ গত বছর ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫৫ একর জমিতে আফিম চাষ করা হয়েছিল। চলতি বছর আফিমের সরবরাহ ৯৫ শতাংশ কমে ৩৩৩ টনে নেমেছে।
আরও পড়ুন: আল-আকসার আদলে মসজিদ বানালো তালেবান
২০২২ সালের এপ্রিলে আফগানিস্তানে আফিম চাষের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তালেবান। আফগানিস্তানই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আফিম উৎপাদনকারী। এখান থেকেই ইউরোপে ও এশিায়য় হেরোইন যেত।
জাতিসংঘের অফিস অফ ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম(ইউএনওডিসি) এই রিপোর্টটি তৈরি করেছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় আফিম চাষ ৯৫ শতাংশের বেশি কম হয়েছে। গত বছর দুই লাখ ৩৩ হাজার হেক্টরে আফিম চাষ হয়েছিল। এবার হয়েছে, ১০ হাজার ৮০০ হেক্টরে।
বিজ্ঞাপন
গতবছর আফিম উৎপাদন হয়েছিল ছয় হাজার দুইশ টন, এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩৩ টন। এই বছর যে চাষ হয়েছে, তার থেকে ২৪ থেকে ৩৮ টন হেরোইন রফতানি করা যাবে। ২০২২ সালে রফতানি করা হয়েছিল ৩৫০ থেকে ৫৮০ টন। গত বছর আফিম চাষ করে কৃষকদের রোজগার হয়েছিল ১৩৬ কোটি ডলার। এবছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ডলারে।
যুদ্ধ পরবর্তী আফগানিস্তানে কৃষকদের নাজুক অবস্থার ওপর আবার আফিম চাষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ছিল তাদের ওপর বাড়তি চাপ। কারণ আফগানিস্তানে বেশির ভাগ কৃষকই আফিম চাষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। আর অবৈধ আফিম রফতানিমূল্য একসময় অন্য সব পণ্যের রফতানিমূল্যকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: কুশতেপা খাল: তালেবানের মেগা প্রজেক্টে বদলে যাচ্ছে আফগানিস্তান
প্রতিবেদনে বলা হয়, হঠাৎ আফিম উৎপাদন কমে যাওয়া দেশটির অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যেখানে দুই–তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠীই মানবিক সহায়তার ওপর টিকে আছে।
আফগানিস্তানের অনেক প্রদেশেই এখন আফিমের বদলে গম চাষ করা হচ্ছে। বলাবাহুল্য, এতে লাভের পরিমাণ আফিম চাষের তুলনায় বেশ কম।
ইউএনওডিসির এক্সিডিউটিভ ডিরেক্টর ঘাডা ওয়ালি বলেছেন, 'আজ আফগানিস্তানের মানুষের জন্য মানবিক ত্রাণ খুবই জরুরি। ধান ও তুলো চাযের জন্য প্রচুর জল দরকার হয়। আর আফগানিস্তানে পরপর তিন বছর খরা হয়েছে। তাই মানুষকে বাঁচাতে সেখানে বিনিয়োগ দরকার। তাহলেই আফগানদের আফিম চাষ থেকে সরিয়ে আনা যাবে।'
একে