মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

আবাসন

মরুর বুকে ‘জাদুর’ নগরী গড়ছে সৌদি

অভিবাসন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

এশিয়ার সবচেয়ে বড় আরব দেশ সৌদি। আলজেরিয়ার পরে আরব বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ এটি। দেশটির সরকার পর্যটনকে গুরুত্ব দিচ্ছে।  

সৌদির যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্ন, মরুভূমির মাঝে আস্ত একটা ‘জাদু’ শহর গড়ে তোলার। সেখানে থাকবে বিলাসবহুল রিসোর্ট, হোটেল, ভাসমান পরিকাঠামো, কৃত্রিম সমুদ্রের মাঝে দ্বীপ।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: সমুদ্রের তলায় শহর বানাচ্ছে জাপান, ঠাঁই হবে ৫ হাজার মানুষের

সৌদি আরবের এক কোণে বিস্তৃত অনুর্বর জমি। চারপাশে ধূ ধূ মরুভূমি। বালি, কড়া রোদ আর নোনা পানি ছাড়া কিছুই ছিল না সেই জমিতে। এবার সেই জমিরই ভোলবদল করতে চলেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ। প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। দেখে বিস্মিত হতে হয়।

city

এ যেনো এক স্বপ্নের শহর


বিজ্ঞাপন


মরুভূমির মাঝে এই ‘ইউটোপিয়া’-র নাম দেওয়া হয়েছে নিওম। ১৪ হাজার ২০০ বর্গমাইল জুড়ে গড়ে উঠতে চলেছে সেই আধুনিক শহর। তার মধ্যে থাকছে ১২টি প্রকল্প।

কী নেই নিওমে? দুনিয়ার সব থেকে বড় ভাসমান পরিকাঠামো, সিহর্স আকৃতির দ্বীপ, যেখানে থাকবে বিলাসবহুল রিসোর্ট, বন্দর, পাহাড়ের খাঁজে হোটেল, বহুতল। তৈরি হবে প্রযুক্তি হাব।

সৌদির যুবরাজের আশা, এর ফলে দেশে পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাবে, অর্থনীতি মজবুত হবে। রিপোর্ট বলছে, প্রকল্পগুলোর খরচ ৫০ হাজার কোটি ডলার থেকে এক লাখ কোটি ডলার হতে পারে। 

conts

২০২১ সালে ‘দ্য লাইন’ প্রকল্পের ঘোষণা করে সৌদি সরকার। এই প্রকল্পে দুইটি সমান্তরাল বহতল তৈরি হবে যাদের দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার। একটির উচ্চতা ২৭৫ মিটার, দ্বিতীয়টির ২২৫ মিটার। দুইটি বহতলের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য থাকবে ঝুলন্ত সেতু।

সেই ঝুলন্ত সেতু দিয়ে যাতায়াত করবে ট্রেনও। একসঙ্গে এই জোড়া টাওয়ারে ৯০ লক্ষ মানুষ বাস করতে পারবেন। আবাসনের পাশাপাশি বহু দফতর থাকবে দুই বহুতলে।

জনপদে কোনও রাস্তা থাকবে না। চলবে না গাড়ি। দোকান, বাজার থাকবে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে। ড্রোন, রোবট, ভোলোকপ্টার জিনিসপত্র পৌঁছে দেবে। গোটা জনপদে আলো জ্বলবে, যান, যন্ত্র চলবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির মাধ্যমে।

মরুভূমিতে এমনিতে বৃষ্টির দেখা মেলে না। তবে নিওমে মেঘ তৈরির জন্য যন্ত্র থাকবে। প্রয়োজন মতো বৃষ্টি উৎপন্ন করানো হবে। আকাশে সব সময়ই থাকবে কৃত্রিম চাঁদের আলো।

neom

বহুতলের বাসিন্দাদের জিনের উন্নয়ন ঘটানোর জন্যও গবেষণা চলবে নিওমে। সেই মতো চিকিৎসকেরা পদক্ষেপ করবেন। একাধিক মিশেলিন স্টার রেস্তোরাঁ থাকবে, যেখানে নানা রকম পদ চেখে দেখার সুযোগ পাবেন বাসিন্দারা।

নিওমে রয়েছে বহুতল ‘অ্যাকোয়েলাম’। ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে এই বিলাসবহুল বহুতল। বাইরে থেকে দেখে মনে হবে, আস্ত একটা পাহাড় দাঁড়িয়ে রয়েছে। লোহিত সাগরের আকাবা উপকূলে থাকছে প্রবেশপথ। সেখান দিয়ে বাসিন্দারা প্রবেশ করবেন অ্যারোয়েলামে।

সি হর্স আকৃতি বিশিষ্ট কৃত্রিম দ্বীপও তৈরি করা হচ্ছে নিওমে। নাম ‘সিন্দালাহ’। আয়তন আট লক্ষ ৪০ হাজার বর্গমিটার। এখানে থাকবে বিলাসবহুল কিছু রিসর্ট। সেখানে থাকা সকলের সাধ্যে কুলোবে না। ২০২৫ সাল নাগাদ শেষ হবে প্রকল্পের কাজ।

২০২৬ নাগাদ শেষ হবে ‘ট্রোজেনা’ প্রকল্পের কাজ। তাবুক অঞ্চলের উচ্চতম পাহাড়ের মাথায় তৈরি হবে প্রকল্প। সেখানে থাকবে স্কি করার জায়গা। ২০২৯ সালের এশিয়ান উইন্টার গেমস হবে এখানেই।

SAUDI_2

নিওমে থাকবে অভয়ারণ্য। তার চারপাশে থাকবে তিনটি বিলাসবহুল হোটেল। এই প্রকল্পের নাম ‘জারদুন’।

পরিবেশবিদেরা এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, নিওমের কারণে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মরুভূমির এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে পরিযায়ী পাখিরা। বহুতল গড়ে উঠলে তারা পথ ভুল করতে পারে।

রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর শরৎকালে ইউরোপ থেকে আফ্রিকা যায় প্রায় ১০০ প্রজাতির ২১০ কোটি পরিযায়ী পাখি। সৌদির তাবুক অঞ্চল দিয়েই আফ্রিকা যায় তারা। নিওম তৈরি হলে পরিযায়ী পাখিদের পথে বাধা আসতে পারে। বহুতলে ধাক্কা খেয়ে বিপত্তিও ঘটতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন পক্ষীবিদেরা।

তথ্যসূত্র: এবিপি

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর


News Hub