সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘স্বাস্থ্যের বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অনেক কিছু করা সম্ভব’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

‘স্বাস্থ্যের বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অনেক কিছু করা সম্ভব’

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, মানুষের উপকারে আসে এমন প্রকল্প হাতে নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রান্তিক পর্যায় সেবার মানোন্নয়ন সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে। 

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে পাওয়া বাজেট বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে অনেক কিছুই করা সম্ভব হবে।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ‘বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য অভিঘাতের ফলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের উপকারে আসবে এমন প্রকল্প, হাসপাতাল তৈরির কাজই আমি করব। যেমন ক্যানসার হাসপাতাল, কিডনি হাসপাতাল, হৃদরোগ হাসপাতাল ইত্যাদি। প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে বার্ন ইউনিট, ক্যানসার, কার্ডিয়াক, নেফ্রোলজির যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করাটা আমার লক্ষ্য। 

একটা দরিদ্র লোক রংপুর থেকে ডায়ালাইসিসের জন্য ঢাকা আসবে সেটা তো হয় না। আমি এমন প্রকল্প নিয়েই কাজ করব যেটা আমি শেষ করতে পারব। সেটা এখন থেকেই করতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সেটার সদ্ব্যবহার করতে পারলে অনেক কিছুই করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

সারাদেশের হাসপাতাল পরিদর্শন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমি বিগত ৪৮ ঘণ্টা উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্যসেবা বিশদভাবে পরিদর্শন করেছি। পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক সব জায়গা আমি সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমি বিশ্বাস করি প্রান্তিক পর্যায়ে জনগণের যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা যদি আমি নিশ্চিত করতে না পারি, আমি ঢাকায় বসে যতই লেকচার দেই কোনো লাভ হবে না। গ্রামাঞ্চলে এবং প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করাটাকে আমি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

মেডিকেল কলেজের মান বাড়ানোর তাগিদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

IMG-6782652787368_1030862515335953

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি নিজে প্রত্যেক জায়গায় গিয়ে চেকআপ করি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখি মেশিন ঠিক আছে কিনা। আমি ওখানে গিয়ে দেখলাম হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিসের রোগী অনেক বেশি। আমি রোগীদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি সব জায়গায় রোগীদের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আমরা যদি ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিসের যথাযথ চিকিৎসা এবং ওষুধ দিতে পারি তাহলে ঢাকা শহরে এত বড় বড় বিশেষায়িত হাসপাতালের দরকার হবে না। 

এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া সামান্য সর্দি-জ্বর হলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এন্টি মাইক্রোবিয়াল রেসিস্টেন্ট ভয়ানক একটা জিনিস। এ বিষয়ে ডিজি ড্রাগকে আরও শক্ত হতে হবে। ফার্মেসিতে গিয়ে কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে আমরা ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন সিস্টেম চালু করার চেষ্টা করছি। ইলেকট্রনিক প্রেসক্রিপশন সিস্টেম যদি চালু করা যায় তাহলে যথাযথ মনিটরিং করা সম্ভবপর হবে, ওষুধের যথেচ্ছ এবং মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমি মন্ত্রী হওয়ার মেয়াদ মাত্র ছয় মাস। এই ছয় মাসে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে আমি অন্তত সাতটি সভা করেছি। আমি যেভাবেই হোক এটা মহান জাতীয় সংসদ নিয়ে যাবো। কারণ রোগী এবং চিকিৎসক উভয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা আমার দ্বায়িত্ব। 

স্বাস্থ্যখাতের সমস্যা মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতের সমস্যা নিরসনে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপার জনমত তৈরি করতে হবে। সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় এবং সৃষ্ট জনমতের কারণে পাঁচ বেড থেকে পাঁচশ বেডের বার্ন হাসপাতাল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বার্ন হাসপাতাল। একটা রোগীও বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে না। রোগীরা আইসিইউতেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছে, স্থান সংকুলান হচ্ছে যেটা আগে সম্ভব ছিল না।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষক ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশ পারিবারিক আয় ব্যয় জরিপের ২০২২ (HIES) ভিত্তিতে তার গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআইডিএসের গবেষক, শিক্ষক শিক্ষার্থী, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। 

এমএইচ/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর