মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

তীব্র তাপদাহে নাকাল রাজধানীবাসী, ভিন্ন চিত্র কলেরা হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

তীব্র তাপদাহে নাকাল রাজধানীবাসী, ভিন্ন চিত্র কলেরা হাসপাতালে
গরমে হাঁসফাঁস রাজধানীবাসীর। ছবি: ঢাকা মেইল

তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা রাজধানীবাসীর। বিশেষ করে জীবিকার তাগিদে রাস্তায় বের হওয়া নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের যেন ত্রাহি অবস্থা। ৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে খেটে খাওয়া মানুষেরা। তবে সাধারণ অবস্থায় তীব্র গরমে হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভিড় দেখা গেলেও এ বছর কিছুটা ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এখানে রোগী কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ ও নববর্ষের ছুটিতে রাজধানীবাসীর একটা বড় অংশ বাইরে অবস্থান করায় রোগীর চাপ কিছুটা কম।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানী তেজগাঁও, মগবাজার ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও কলেরা হাসপাতাল এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।


বিজ্ঞাপন


বেলা বারোটায় তেজগাঁও ও মহাখালী এলাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বাতাসের আর্দ্রতার কারণে অনুভূত হচ্ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মাঝে কলেরা হাসপাতালের সামনে রুটি-কলাসহ হাসপাতালে ব্যবহার্য বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করতে দেখা যায় ষাটোর্ধ্ব মজিবুর মিয়াকে। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘গরমে জান যায় যায় অবস্থা। শরীর বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। রাস্তার উপর হওয়ায় কোনো ছাউনি দেওয়া সুযোগ নেই। কাঠ ফাটা রোদে বসে মনে হচ্ছে মগজটা গলে যাচ্ছে। কিন্তু পেট তো চালাতে হবে।’

আরও পড়ুন

চলতি বছরের তাপপ্রবাহ তীব্র হওয়ার আশঙ্কা কেন, করণীয় কী?

পাশেই গলিতে অবস্থান করা রিকশা চালক গফুর মিয়া বলেন, ‘বৈশাখ মাসে গরম তো পরড়েই। তবে তাপটা অনেক বেশি লাগছে। কিন্তু জীবন তো চালাতে হবে। বাড়িতে বউ বাচ্চা আছে, গরমের কথা চিন্তা করলে খাবো কী? সাথে পানির একটা বোতল আছে, পানিও আগুন হয়ে আছে। একটু পরপর পানি খাচ্ছি। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’

Dhaka3


বিজ্ঞাপন


তপ্ত দুপুরে মগবাজার রিকশা চালিয়ে যাওয়া আব্দুল্লাহকে ওয়ারলেস মোড়ে এসে লেবুর শরবত খেতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের গরম পড়ছে। রিকশা চালাইতে জান বের হয়ে যাচ্ছে। সাথে থাকা পানি আগুন হইয়া গেছে। লেবুর শরবতটা ঠান্ডা হয় তাই খেতে দাঁড়াইছি।’

আরও পড়ুন

বেলা গড়াতেই রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে

তবে বরফের উৎস ও পানিবাহিত রোগের প্রসঙ্গে তুললে এতে তার কিছু হবে না উল্লেখ করে বলেন, ‘আল্লাহ ভরসা। আগে বাঁচা তো লাগবে। পরে ডায়রিয়ার চিন্তা।’

স্বাভাবিকের তুলনায় রোগী কম কলেরা হাসপাতালে

এদিকে প্রতি বছর গরমে রাজধানীতে ব্যাপকভাবে ডায়রিয়ার সংক্রমণ দেখা দেয়। যেসব রোগীর একটা বড় অংশের স্থান হয় আইসিডিডিআর,বির কলেরা হাসপাতালে। তবে চলতি বছর হাসপাতালটিতে গত কয়েক বছরের তুলনায় রোগী কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে আইসিডিডিআর,বি কলেরা হাসপাতালে প্রায় সাড়ে চারশ রোগী রয়েছে। যা এ সময়ে স্বাভাবিক রোগী সংখ্যার তুলনায় কম।

Dhaka2

জানতে চাইলে আইসিডিডিআর’বির গণমাধ্যম ব্যবস্থাপক তারিফুল ইসলাম খান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় রোগী কম। গত বছর এ সময় আমাদের এখানে গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী ভর্তি থাকতো। ২০২২ সালে তা সর্বোচ্চ ১৩০০ থেকে ১৪০০-তে পৌঁছেছিল। এবার আমাদের এখানে দিনে ৪০০ থেকে ৪৫০ এর মতো রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আজ প্রায় ৪৫০ জন রোগী ভর্তি আছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নিম্নবিত্ত মানুষ সাধারণত আমাদের এখানে আসে। ঈদ ও নববর্ষের ছুটি থাকায় ঢাকায় এখনো মানুষ ফেরেনি। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা কম।’

এমএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর