শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

বেলা গড়াতেই রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

বেলা গড়াতেই রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে

তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁসফাস অবস্থা। শুক্রবার দুপুর গড়ালেও রোদের তীব্রতা এতটাই, যেন আকাশ থেকে আগুনের ফুলকি ঝরছে। 

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য বলছে, আজ ঢাকায় তাপমাত্রা প্রায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস চলছে। তাপমাত্রার এই পূর্বাভাস আগেই দেওয়া ছিল।


বিজ্ঞাপন


চলতি মাসের টানা গরমের কারণে মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছে। রমজানে ইফতারে তরমুজ, ফলমূল এবং ঠান্ডা জাতীয় পানি শরবত খেয়ে অনেকে তৃষ্ণা নিবারণ করেছেন। কিন্তু ঈদের দিন থেকে ঢাকায় তেমন দোকানপাট খোলা নেই। তরমুজও তেমন মিলছে না। সড়কগুলোতে যানবাহন কম। খাঁ খাঁ করছে ফুটপাতগুলো। ভাসমান দোকানের দেখা মিলছে না।

তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দেখাও মিলেছে শরবত বিক্রেতাদের। রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় দেখা গেছে, ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের সামনের গেটে বরফ পানির সাথে লেবু ও লবণ মিশিয়ে গ্লাসে ঝাঁকিয়ে প্রতি গ্লাস ১০ টাকায় বিক্রি করছে বিক্রেতা। লোকজনও ভিড় জমাচ্ছে তার দোকানে। বিশেষ করে যারা শিশু সন্তানদের নিয়ে পার্কে বেড়াতে এসেছেন।

সেলিনা পারভিন নামে এক গৃহিণী তার দুই সন্তান এবং স্বজনদের নিয়ে পার্কে বেড়াতে এসেছেন। পার্কে ঢোকার আগে তারা এক গ্লাস করে ঠান্ডা পানির শরবত খেতে ভোলেননি।

সেলিনা পারভীনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে হলেও স্বামী ঢাকায় চাকরি করে সেই সুবাদে তিনিও ঢাকায়।


বিজ্ঞাপন


4

তিনি বলেন, গত দশ বছরে এমন রোদের আঁচ (তাপ) কখনো দেখেননি। আজ গরম বাতাস শরীরের চামড়ায় এসে বেঁধে দিচ্ছে। তার উপরে মাথার ওপর রোদ আর গরম। তাই সকলে মিলে এক গ্লাস করে শরবত খেলাম।

দুপুর ১২টার পরে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া তেমন যানবাহন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যারা বাহিরে বের হচ্ছেন প্রয়োজনে। এর বাহিরে অনেকেই বাচ্চাদের নিয়ে বিনোদন স্পটগুলো ঘুরছেন। তবে গরমে সবার অবস্থা কাহিল। 

তীব্র রোদের কারণে পাখিরাও বেসামাল হয়ে পড়েছে। কোথাও পানি পেলে তারা তাতে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। তবে আকাশে পাখি কম। অধিকাংশ কাক পাখি অন্যান্য পাখিগুলো গাছের ডালে ডালে অবস্থান নিয়েছে। গরমের চোটে চড়ুইরা ডাকাডাকি করছে। 

রাস্তাঘাটে তেমন রিকশার দেখাও মিলছে না। স্বল্প দূরত্ব ছাড়া অনেক দূরের ভাড়া নিতে চাচ্ছে না কেউ। বাহিরে যারা বের হচ্ছেন প্রত্যেকের হাতে একটি করে ছাতা দেখা মিলছে। তবে গরমের কারণে শিশুদের রোগ বাড়ছে। তারা অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। 

আগারগাঁও রোডের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সামনে সড়কে ফুচকা বিক্রি করেন শামীম। তিনি বলেন, গতবছর ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে তার ফুচকা বিক্রি জমজমাট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আজ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তিনি ক্রেতা পাননি।

তার মতে, গরমের কারণে লোকজন বাসা থেকে বের হচ্ছে না। হয়তো বিকেলে গরম রোদ কমলে লোকজন বের হতে পারে। তখন কিছুটা ব্যবসা জমাতে পারবেন তিনি। 

পাসপোর্ট অফিসের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন অলিউর রহমান। তিনি যাবেন বাড্ডায়। কিন্তু ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়েও কোনো বাস পাচ্ছেন না।

তীব্র রোদের কারণে বাসের সংখ্যা কমেছে। সিএনজি চলছে তবে তাতে চড়ার মতো তার ভাড়া নেই। বাধ্য হয়ে গরমে ফুটপাতের পাশে একটি গাছের নিচে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। 

গরমের কারণে মানুষের তৃষ্ণা বেড়েছে। বাইরে বের হওয়া লোকজনের অনেকে দোকানপাটে পানি না পেয়ে বিভিন্ন এলাকায় বাহিরে রাখা পানির কলে ভিড় জমাচ্ছেন। 

এমআইকে/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর